এক বছরের বেশি সময় আটক রাখা আট ভারতীয়কে কাতারের এক আদালত মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সে দেশের আদালত এ রায় দেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ রায়কে ‘বেদনাদায়ক’ বলে উল্লেখ করেছে।
ওই কর্মকর্তারা কাতারে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ওঠার পর ২০২২ সালে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। জানা গেছে তারা ভারতীয় নৌ বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে তারা ভারতীয় নৌ বাহিনীতে ছিলেন।
দণ্ডিত ব্যক্তিরা হলেন সাবেক ক্যাপ্টেন নভতেজ সিং গিল, ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্র কুমার ভার্মা, ক্যাপ্টেন সৌরভ বশিষ্ট, কমান্ডার অমিত নাগপাল, কমান্ডার পূর্ণেন্দু তিওয়ারি, কমান্ডার সুগুণাকর পাকালা, কমান্ডার সঞ্জীব গুপ্ত এবং নাবিক রাগেশ।
তবে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগে তাদের ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়েছে সেটি কাতার বা ভারতীয় কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করেনি বলে বিবিসি জানিয়েছে।
ভারত সরকার এ ঘটনায় বলছে, তারা ‘গভীরভাবে মর্মাহত’। রায়ের বিরুদ্ধে তারা সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া অবলম্বন করবে বলেও জানিয়েছে।
বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, “দণ্ডপ্রাপ্তদের পরিবারের সদস্য ও আইনি দলের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি। আইন প্রক্রিয়ার সবগুলো পথই আমরা অনুসন্ধান করছি।”
এনডিটিভি জানিয়েছে, কাতারের দাহরা গ্লোবাল টেকনোলজিস অ্যান্ড কনসালটেন্সি সার্ভিসেস নামের একটি প্রতিষ্ঠানে তারা কাজ করছিলেন। বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি কাতারের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণ এবং ওই সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। দণ্ডপ্রাপ্তদের কেউ কেউ গোপনে কার্যক্রম চালানো ইতালীয় প্রযুক্তিভিত্তিক ক্ষুদ্র সাবমেরিন তৈরির মত অত্যন্ত স্পর্শকাতর প্রকল্পেও কাজ করছিলেন।
পরবর্তীতে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ উঠলে ২০২২ সালের আগস্টে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। তখন থেকে তাদের মুক্তির জন্য কাজ করে আসছিল দিল্লি।
গত মার্চে তাদের বিচার শুরু হয়। জামিনের আবেদনও বেশ কয়েকবার বাতিল করে তাদের আটকের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সবশেষে ‘কোর্ট অব ফার্স্ট ইন্সট্যান্স অব কাতার’ এই রায় দিল।
উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে লাখ লাখ ভারতীয় রয়েছেন, যারা স্বল্প দক্ষ কিংবা অদক্ষ নিম্নআয়ের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর অর্থনীতিতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ভারতের প্রবাসী আয়েও তারা গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক।