জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজা শিশুদের কবরস্থানে পরিণত হচ্ছে। একইসঙ্গে ক্রমাগত অবনতি হওয়া পরিস্থিতি মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তাকে আরও জরুরি করে তুলেছে।
সোমবার (৬ নভেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘে এক সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব বলেন, গাজার দুঃস্বপ্ন একটি মানবিক সংকটের চেয়েও বেশি। এটি মানবতার সংকট।
এক মাস ধরে চলমান যুদ্ধে গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার পর এমন মন্তব্য করলেন জাতিসংঘের মহাসচিব।
এ সময় গুতেরেস ঘোষণা করেন যে, জাতিসংঘ এবং এর অংশীদাররা গাজা, পশ্চিমতীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের জনগণকে সাহায্য করার জন্য ১.২ বিলিয়ন ডলারের মানবিক আবেদন শুরু করতে যাচ্ছে।
গুতেরেস বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সশস্ত্র সংঘাতের কোনো পক্ষই আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ঊর্ধ্বে নয়। চলমান সংঘাত ‘বিশ্বকে কাঁপিয়েছে’ এবং ‘অনেক নিরপরাধ জীবনকে ধ্বংস করেছে’, যোগ করেন তিনি।
সোমবার হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। সোমবার পর্যন্ত ১০ হাজার ২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৪ হাজার ১০৪ জন শিশু রয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একজন প্রতিনিধি গাজা থেকে বলেছেন, ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের শুরু করা যুদ্ধে রোববার রাতে আকাশ, স্থল এবং সমুদ্রপথে সবচেয়ে তীব্র বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আর হামাসের হাতে জিম্মি রয়েছেন ২৪২ জনের বেশি ইসরায়েলি ও বিদেশি।
ইসরায়েল বলেছে, তাদের সৈন্যরা গাজা শহর ঘিরে রেখেছে। তবে এই অভিযানে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চাপের মুখে পড়েছে ইসরায়েল। ওই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন যুদ্ধ শুরুর পর দ্বিতীয়বারের মতো সফরে রয়েছেন। হামাস-ইসরায়েল সংঘাত ওই অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি ঠেকাতে তিনি মধ্যপ্রাচ্য সফর করছেন।