মঙ্গলবার (১৪ নভ্ম্বের) ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’। দিবসটি উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং মোকাবিলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারলে ডায়াবেটিসের প্রকোপ অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ডায়াবেটিসের ঝুঁকি জানুন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন’। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডায়াবেটিস একটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে- অতিরিক্ত ফাস্টফুড ও চর্বিযুক্ত খাবার খেলে, শারীরিক পরিশ্রম ও নিয়মিত শরীর চর্চা না করলে, স্বাভাবিকের চেয়ে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে ডায়াবেটিস হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘কাজেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে এবং তা মোকাবিলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারলে ডায়াবেটিসের প্রকোপ অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব। এ বিষয়ে তাই জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। পাশাপাশি ডায়াবেটিস রোগীদেরকে নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্য খাওয়া, সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করা ছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ ও ইনসুলিন গ্রহণ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি সরকারের পাশাপাশি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা সৃষ্টিসহ নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করে চলেছে। আমাদের সরকার টাইপ-১ ডায়াবেটিক রোগীদের বিনামূল্যে ইনসুলিন প্রদানের লক্ষ্যে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণেও আওয়ামী লীগ সরকারের সব সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
আমাদের নিত্য ব্যবহার্য শব্দগুলোর মধ্যে এখন ডায়াবেটিস শব্দটি বেশ কমন হয়ে পড়েছে। কেননা ডায়াবেটিস যেন এখন মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে। দেখা যাবে যে আমাদের আশেপাশেরই কারো না কারো ডায়াবেটিস আছে। এমনকি জরিপে দেখা গেছে, ১৯৮০ সালে বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ছিল যেখানে ১০৮ (১০ কোটি ৮০ লাখ) মিলিয়ন সেখানে তা আজ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২২ (৪২ কোটি ২০ লাখ)। এ থেকেই বুঝা যায় সামনে দিনে পরিস্থিতি আরো কত ভয়াবহ হতে চলেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে গত প্রায় ১৫ বছরে স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। গণমুখী স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়ন করে যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নতুন নতুন হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যার ফলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।’
সারাদেশে হাসপাতালগুলোর শয্যা বৃদ্ধিসহ চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্টিং স্টাফের সংখ্যা বহুলাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে। মেডিকেল শিক্ষার প্রসারে নতুন নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। গ্রাম পর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এসব কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ফ্রি স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।