ইসরায়েলি সেনারা গাঁজার সবথেকে বড় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র আল-শিফা হাসপাতালে ঢুকে তান্ডব শুরু করেছে। গত মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে সেনারা হাসপাতালে অভিযান শুরু করে।
সেনারা হাসপাতালে থাকা লোকদের জনে জনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি। হাসপাতালে থাকা সাংবাদিক কাদের জানান, ইসরায়েলের সেনারা প্রতিটি কক্ষে এবং তলায় তলায় প্রবেশ করছে। তারা সেখানে থাকা রোগী ও স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
ইসরায়েল আগে থেকেই অভিযোগ জানিয়ে আসছিল যে হাসপাতালটিতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সদস্যরা লুকিয়ে আছেন এবং সেখান থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তবে হামাস এই অভিযোগ সব সময়ই অস্বীকার করে আসছিলো। এখন বলা হচ্ছে, এই অভিযান ‘প্রয়োজন’ ছিল।
এদিকে আল জাজিরা জানিয়েছে, হাসপাতালের আশেপাশে এবং ভেতরেও গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। রোগী আর হাসপাতাল স্টাফরা জানালার কাছ ঘেঁষে না দাঁড়ালে গুলি ছোড়ে দখলদার দেশটির সেনাবাহিনী।
এর আগে বুধবার সকালে প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে বিবিসি জানায়, গাজার আল-শিফা হাসপাতালে ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলের সেনারা। হাসপাতালের ভেতরে তারা তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে।
কাদের আল জানুন নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হাসপাতলে ঢুকে তারা স্মোক বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এতে করে সেখানকার রোগীদের শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে।
তিনি বলেন, সেনারা হাসপাতালের বিশেষায়িত অস্ত্রপচার বিভাগে ঢুকে পড়েছে। তিনি এ কথা বলার পরপর তার সঙ্গে বিবিসির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
আল-শিফা হাসপাতালের অভ্যন্তরে থাকা আল জাজিরার প্রতিনিধি জানিয়েছে, প্রায় ৩০ জনকে ভবনের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাদের পোশাক খুলে নেওয়া হয়েছে। তারা হাসপাতালের উঠানে, চোখ বেঁধে, তিনটি ট্যাঙ্ক দিয়ে ঘেরা। এই বিল্ডিংগুলির ভিতরে যে কোনও চলমান বস্তুকে লক্ষ্য করে জরুরি বিভাগের ঠিক সামনে একটি ট্যাঙ্ক রয়েছে।
এদিকে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলা এক বিবৃতিতে, গাজার আল-শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানকে ‘মানবতার বিরুদ্ধে নতুন অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ফিলিস্তিনের ওয়াফা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে তিনি বলেন, হাসপাতালটিতে অসহায় রোগীরা আছেন। সেই সঙ্গে আছেন চিকিৎসাকর্মীরা। হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ইসরায়েল মানবতার বিরুদ্ধে চরম অপরাধ করেছে।