গাজাবাসী প্রতিদিন দুই ট্রাক জ্বালানি পাবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল। যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে জ্বালানি ঢুকতে দিতে রাজি হয়েছে ইসরাইল।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) এক ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েল ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম টাইমস অফ ইসরায়েল।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রতি দুই দিনে গাজায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার লিটার জ্বালানি তেল প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ২৩ লাখের বেশি মানুষের এই অঞ্চলে পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে ইসরায়েলি সেনারা। এর আওতায় সেখানে খাবার, পানি, গ্যাস ও জ্বালানি ঢুকতে দেয়নি তারা। ফলে গাজায় চরম মানবিক সংকট দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে কয়েক দিন আগে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে অল্প পরিমাণ ত্রাণ সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেয় তেল আবিব। তবে এসব ত্রাণ সহায়তায় এতদিন কোনো জ্বালানি ছিল না।
জ্বালানির অভাবে পরিবহন ব্যবস্থা আগেই ভেঙে পড়েছে। এরপর একে একে বন্ধ হয়ে গেছে হাসপাতালগুলোও। এর ফলে নজিরবিহীন দুর্দশায় পড়েছে গাজাবাসী।
চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘ জানায়, জ্বালানির মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় গাজায় তাদের ত্রাণ সহায়তার কাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দিতে ইসরাইলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছিল।
তারই প্রেক্ষিতে জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দেয়া হলো। এছাড়া ইসরাইলি কর্মকর্তারা মনে করছেন, গাজায় জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দেয়ার কারণে চলমান সংঘাতের কারণে বিশ্বজুড়ে ইসরাইলের প্রতি যে বিরুপ মনোভাব তৈরি হয়েছে তা দূর হবে। যার ফলে উপত্যকাটিতে হামাস নির্মূলের অভিযান অব্যাহত রাখতে পারবে ইসরাইল।
গত ১৫ নভেম্বর বিবিসি জানিয়েছিল, ইসরাইলি হামলার পর গাজায় প্রথমবারের মতো সেখানে জ্বালানি সরবরাহ করেছে একটি ট্যাংকার। জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, তারা মিশরের রাফাহ ক্রসিং দিয়ে ২৩ হাজার লিটার (৫ হাজার ৬০ গ্যালন) জ্বালানি সরবরাহ পেয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে চালানো হামাসের হামলার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। এমনকি ওইদিনই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাতে জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেন নেতানিয়াহু সরকার। যার ফলে বড় ধরণের মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছেন গাজাবাসীরা
প্রসঙ্গত, টানা ৪২ দিন ধরে গাজায় চালানো ইসরাইলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত সাড়ে ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার শিশু। এছাড়াও ৩০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।