ফিলিস্তিনের উত্তর গাজায় ৬১ ট্রাক ত্রাণ সরবরাহ করা হয়েছে। ত্রাণবাহী এসব ট্রাকে রয়েছে চিকিৎসা সরঞ্জাম, খাদ্য ও পানি।এছাড়া ত্রাণবাহী আরো দুশো ট্রাক ইসরাইলের নিতজানা থেকে গাজার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক-বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয় (ওসিএইচএ) শনিবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে।
গাজা উপত্যকায় চলছে চার দিনের যুদ্ধবিরতি। এ যুদ্ধবিরতির কারনে সহায়তাসামগ্রী নিয়ে ট্রাকগুলো অবরুদ্ধ গাজায় যেতে পেরেছে। ওসিএইচএর বিবৃতিতে বলা হয়, এই ট্রাকগুলোর মধ্যে ১৮৭টি গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধ্যা নাগাদ সীমান্ত অতিক্রম করেছে।
ওসিএইচএর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, লোকজনকে সরিয়ে নিতে সহায়তার জন্য গাজার উত্তরাঞ্চলের আল-শিফা হাসপাতালে ১১টি অ্যাম্বুলেন্স, ৩টি কোচ ও ১টি ফ্ল্যাটবেড পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি এ হাসপাতালে সরাসরি অভিযান চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এখানে ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের তুমুল লড়াই হয়েছিল।
ওসিএইচএর বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধবিরতি যত দীর্ঘ হবে, মানবিক সংস্থাগুলো তত বেশি গাজায় সহায়তা পাঠাতে সক্ষম হবে। দেড় মাসের বেশি সময় ধরে ইসরাইলের নির্বিচার হামলার পর গত শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল সাতটায় গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। জিম্মি ও বন্দী বিনিময়ের শর্তে চার দিনের এ যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র।
যুদ্ধবিরতিকালে মোট ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা হামাসের। পরিবর্তে ইসরায়েল কমপক্ষে ১৫০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে। এ ছাড়া গাজায় আরও মানবিক সহায়তার সুযোগ দেবে ইসরায়েল। স্থানীয় সময় রোববারের প্রথম দিক নাগাদ এ জিম্মি ও বন্দী বিনিময়ের অব্যাহত ছিল। জাতিসংঘের তথ্যমতে, শুক্রবার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর মোট ১৩৭টি ট্রাক গাজায় ত্রাণসহায়তা সরবরাহ করেছে।
ওসিএইচএ বলেছে, তারা চায় আরও জিম্মি মুক্তি পাক। এছাড়া আরও ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তি পরিবার-প্রিয়জনদের জন্য স্বস্তি নিয়ে আসবে বলেও ওসিএইচএ উল্লেখ করেছে। উল্লেখ্য, হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায়। ইসরাইলের ভাষ্যমতে, হামাসের এ হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া দুই শতাধিক ব্যক্তিকে ইসরায়েল থেকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে হামাস।
এ প্রেক্ষিতে ৭ অক্টোবর থেকে গাজাকে অবরুদ্ধ করে নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে আসছিল ইসরায়েল। পাশাপাশি তারা গাজায় স্থল ও নৌ অভিযানও চালাচ্ছিল। হামাস সরকার বলেছে, অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরাইলের হামলায় প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের বেশির ভাগই বেসামরিক লোকজন। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশুও রয়েছে।