জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভারে কারণে ইতোমধ্যেই বিশ্বের অর্থনীতি থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ছিন্নভিন্ন করছে। উন্নয়নশীল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার কপ-২৮ জলবায়ু নিয়ে আলোচনার আগে প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
ডেলাওয়্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে, মানব-সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলো গত বছরের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক উৎপাদন থেকে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
পরিসংখ্যানগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ ফলাফলকে প্রতিফলিত করে-যেমন কৃষি ও উৎপাদনে ব্যাঘাত এবং উচ্চ তাপ থেকে উৎপাদনশীলতা হ্রাস-সেই সাথে বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উপর ছড়িয়ে পড়া প্রভাব।
ডেলাওয়্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রতিবেদন তৈরিকারক জেমস রাইজিং বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্ব ট্রিলিয়ন ডলারের দরিদ্রতর হয়েছে এবং সেই সাথে ইতোমধ্যেই অনেক দেশ চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি।’
গড় ব্যক্তির দ্বারা বহন করা প্রভাবগুলো বিবেচনা না করে গণনা করা হলে ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী জিডিপির লোকসান ছিল ১ দশমিক ৮ শতাংশ- বা প্রায় ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রতিবেদন প্রকাশকারীরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই দু’টি সংখ্যার পার্থক্য গুলো অসম বন্টনকে কেন্দ্রীভূত হয়, যেখানে সাধারণত বেশি জনসংখ্যা এবং কম জিডিপি রয়েছে।’
স্বল্পোন্নত দেশগুলো ৮ দশমিক ৩ শতাংশের উচ্চ জনসংখ্যা- জিডিপি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়েছে। কারণ তাদের জিডিপি যথাক্রমে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ এবং ১১ দশমিক ২ শতাংশ হারিয়েছে।
অন্যদিকে কিছু উন্নত দেশ লাভবান হয়েছে। ইউরোপ গত বছর জিডিপিতে প্রায় পাঁচ শতাংশ নেট লাভ করে। প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, এ ধরনের লাভগুলো ‘ক্ষয় হতে চলেছে।’
মিশরে গত বছরের কপ-২৭ মোকাবেলায় দুর্বল দেশগুলোকে সহায়তা করার জন্য উৎসর্গীকৃত তহবিল গঠন করতে সম্মত হয়েছিল। বৃহস্পতিবার থেকে দুবাইতে শুরু হওয়া এই বছরের কপ-২৮ আলোচনায় এটি মূল বিষয় হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো গত ৩০ বছরে মোট ২১ ট্রিলিয়ন ডলারের মূলধন এবং জিডিপির সম্মিলিত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, যা উন্নয়নশীল বিশ্বের মোট ২০২৩ জিডিপির প্রায় অর্ধেক। প্রতিবেদকরা উল্লেখ করেছেন, ক্ষতিগুলোর অনুমান রক্ষণশীল।