থাইরয়েড এমনই একটি রোগ যাতে ওজন দ্রুত বাড়তে থাকে এবং সময়মতো নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সেটি সুগারের মতো অনেক অন্য রোগের কারণও হয়ে উঠতে পারে। একটু সচেতনতা ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস অবলম্বন করলে এ রোগ নিরাময় করা যায়।
বর্তমানে থাইরয়েড একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ রোগে আক্রান্ত হলে ওজন কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে থাকে না। চুল অকালেই ঝরে পড়ে, ত্বক হয়ে ওঠে জৌলুসহীন। তাই আসুন জেনে নিই ডায়েটে ঠিক কোন খাবারগুলো রাখলে থাইরয়েড রোগটি ভালো না হলেও বশে রাখতে পারবেন।
থাইরয়েড গ্রন্থিটি আমাদের গলায় শ্বাসনালির সামনের দিকে অবস্থিত। এই গ্রন্থি থেকে দুধরনের হরমোন টি থ্রি ও টি ফোর নিঃসরিত হয়। আমাদের শরীরের রক্তে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় এই হরমোন থাকে। থাইরয়েডের সমস্যা প্রধানত দুধরনের হয়। হাইপারথাইরয়েডিজমে রক্তে থাইরয়েড নিঃসৃত হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। আর অন্যটি হলো হাইপোথাইরয়েডিজমে রক্তে থাইরয়েড নিঃসৃত হরমোনের পরিমাণ কমে যায়।
আসুন জেনে নেই থাইরয়েডের রোগীর উপকারি খাবারগুলো:
১. আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার: থাইরয়েডের রোগীর সেই সব পদার্থ খাওয়া উচিত যাতে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন থাকে। কারণ এর পরিমাণ থাইরয়েড ফাংশনকে প্রভাবিত করে। তাই সি ফুড, বিশেষ করে মাছ আয়োডিন সমৃদ্ধ খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না।
২. খনিজ সমৃদ্ধ খাবার: কপার এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুন। কারণ এগুলো থাইরয়েডের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। কাজু, বাদাম এবং সূর্যমুখীর বীজে সর্বাধিক পরিমাণে কপার পাওয়া যায় এবং সবুজ শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়।
৩. ভিটামিন: খনিজের পাশাপাশি ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারকেও ডায়েটে সামিল করুন। এটি থাইরয়েডের রোগীদের জন্য উপকারী। এক্ষেত্রে পনির, কাঁচা, লঙ্কা, টমেটো, পেঁয়াজ , রসুন, মাশরুমে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পাওয়া যায়।
৪. কম চর্বিযুক্ত খাদ্য: কম চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করুন। অন্যদিকে গরুর দুধ থাইরয়েড রোগীদের জন্য উপকারী। এছাড়া থাইরয়েড রোগীরা রান্নায় নারকেল তেল ব্যবহার করলেও উপকার পাবেন।
থাইরয়েড সমস্যা থেকেই গলগণ্ড, থাইরয়েডাইটিস, হাইপারথাইরয়েডিজম, হাইপোথাইরয়েডিজম, গ্রেভস ডিজিজ, থাইরয়েড ক্যানসার, থাইরয়েড নোডুলস, থাইরয়েড স্টর্মসহ নানা রোগ হয়। তাই থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতায় অবহেলা নয়। সঠিক খাবার প্রাধান্য দেয়ার মাধ্যমেই বশে রাখুন জটিল এ রোগকে।