বুধবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেয়র শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাতের বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, শ্বাসকষ্ট নিয়ে মেয়র সোমবার চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন।
এর আগে আরফানুল হক রিফাত হৃদরোগ ও মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নানা শারীরিক জটিলতায়ও ভুগছিলেন।
মেয়রের মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারসহ কুমিল্লার আওয়ামী লীগের নেতারা। তার মৃত্যুতে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
গত বছর ১৫ জুনের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল সাক্কুকে ৩৪৩ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে বিজয়ী হন তিনি।
কুমিল্লা নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মনোহরপুর এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত এস এম আতাউল হকের ছেলে আরফানুল হক রিফাত। ১৯৭৬ সাল থেকে ভিক্টোরিয়া কলেজে ছাত্রলীগ করার মধ্যদিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন তিনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের পর কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বিতর্কিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদের জনসভা পণ্ড করার অপরাধে সামরিক আইনে তার তিন বছরের সাজা হয়েছিল। এরপর বিদেশে পালিয়ে গিয়ে তিনি সেই সাজা থেকে রক্ষা পান।
আরফানুল হক রিফাত ১৯৮০ সালে কুমিল্লা শহর ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৮১ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রলীগের প্যানেলে তিনি বহি:ক্রীড়া ও ব্যায়ামাগার সম্পাদক নির্বাচিত হন।
একই বছরে জামায়াত-শিবিরের হামলার শিকার হন তিনি। সে সময় তার দুই হাত ও দুই পায়ের রগ কেটে দেয় জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা।
১৯৯৬ সালে তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি কুমিল্লা জেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের টানা দুইবারের সাধারণ সম্পাদকের ছিলেন রিফাত। এ ছাড়া ১৩ বছর যাবত তিনি কুমিল্লা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
তিনি জেলা ক্রীড়া সংস্থা সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা ক্লাবের দুইবারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।