স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্র মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে বাঙালিকে উদ্দীপ্ত করেছে, এরপর দেশ ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখা ৮৪ বছরের সমৃদ্ধ বেতার বাংলাদেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধ ও মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতেও ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তথ্য ও সসম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বেতার ভবন মিলনায়তনে বিজয় দিবস ও বাংলাদেশ বেতারের ৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আশাবাদ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া সভায় সভাপতিত্ব করেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের খবর ও অনুষ্ঠান শোনার জন্য মানুষ যে কি উদগ্রীব, উৎকণ্ঠিত হয়ে থাকতো তা বলার নয়। যারা শোনেনি, তাদের পক্ষে সেই থ্রিল অনুভব করা সম্ভব নয়।
পাকিস্তানি হানাদারদের শতশত বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেওয়া, ব্রাশফায়ারে হত্যাযজ্ঞ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণপাত প্রতিরোধের ইতিহাস তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এতো ত্যাগ-তিতিক্ষার পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে দেশ যখন শত্রুমুক্ত হয়, তখন মুক্তিযোদ্ধা আর মানুষের উচ্ছ্বাস ভাষায় প্রকাশের নয়। মুক্তিযুদ্ধের ফুটেজে আপনারা দেখতে পান, খালি পায়ে লুঙ্গি-গেঞ্জি পরা সাধারণ মানুষগুলো যুদ্ধ করেছিল, একটি জনযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছি আমরা।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেক পাকিস্তানি নেতা আত্মতুষ্টির জন্য বলতো- ভুখা বাঙালি চলে গেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা আর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দেশ পরিচালনার সার্থকতা এখানেই যে আমরা সামাজিক, মানবিক, অর্থনৈতিক সকল সূচকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে অনেক এগিয়ে গেছি। বাংলাদেশ আজকে পৃথিবীর সামনে উন্নয়নের রোল মডেল। এখন পাকিস্তানিরা তাদের নেতাদেরকে বলে আমদেরকে বাংলাদেশ বানিয়ে দাও।’
তিনি বলেন, এটিও সত্যি যে, দেশে ধ্বংসাত্মক এবং সবকিছুতে না বলার নেতিবাচক রাজনীতি যদি না থাকতো তাহলে বাংলাদেশ আরো বহুদূর এগিয়ে যেত। হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের স্বপ্ন শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নয়, ইউরোপের অন্ধ অনুকরণ নয়, আমাদের স্বপ্ন একটি উন্নত সমৃদ্ধ ও মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা। বেতার এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি প্রত্যাশা করি।
আলোচনা শেষে বেতার শিল্পী ও কুশলীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।