বাংলাদেশের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক এবং সম্ভাবনার সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও বেশি সম্প্রসারিত ও ঘনিষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি একথা বলেন।
অনেক মহল বলছে নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা নিলেও নিতে পারে, আওয়ামী লীগের একজন এমপি হিসেবে আপনি কি মনে করছেন সম্পর্ক মধুর দিকে যাচ্ছে- এ প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, আমি মনে করি যে আমাদের নতুন সরকারের নতুন মন্ত্রিসভার একজন নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি দেশের একজন রাষ্ট্রদূত দেখা করার এবং তার মধ্য দিয়ে ব্যবসা, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-উদ্ভাবন- এগুলো নিয়ে আলোচনা করার মধ্য দিয়ে নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পারেন যে, বাংলাদেশের সাথে আমেরিকার সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো রয়েছে এবং আগামী পাঁচ বছর নতুন সরকারের সাথে আরও নতুন নতুন বিষয় নিয়ে সম্ভাবনার দ্বারগুলো উন্মোচিত হচ্ছে।
‘আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে সেটাই মনে হয়েছে যে, বাংলাদেশের ব্যাপারে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো খুব আগ্রহী এবং আমেরিকার রাষ্ট্রদূত জনাব পিটার হাস, উনার যে বিভিন্ন কথা এবং আলোচনার বিষয় বস্তু, এগুলো থেকে আমার কাছে মনে হয়েছে যে, বাংলাদেশের সাথে আমেরিকার, ভবিষ্যতে যে আমাদের যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং যে সম্ভাবনার সম্পর্কটা এটা আরও বেশি সম্প্রসারিত হবে, আরও ঘনিষ্ট হবে।’
পলক বলেন, আগামী ৪১’ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প সেটি পূরণের জন্য আমরা সকলের সাথে বন্ধুত্বের যে হাত বাড়িয়েছি সেখানে আমেরিকার বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় হবে এবং আমরা এক সাথে মিলে কাজ করবো দুই দেশের জনগণের জন্য, সারা বিশ্বের জন্য। আমার কাছে আজকের বৈঠক থেকে এটাই মনে হয়েছে।
সৌজন্য সাক্ষাতের বিষয়ে পলক বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে রূপকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন, সেটা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে কাজ করবে, তা নিয়ে আজ কথা হয়েছে।
‘আমাদের আলোচনার মূল তিনটি উদ্দেশ্য ছিল, আমেরিকা আমাদের সফটওয়্যার ও ফ্রিল্যান্সারদের আউটসোর্সিংয়ের সবচেয়ে বড় গন্তব্য। যে ৬০টি দেশে আমরা সফটওয়্যার রফতানি করি, আমেরিকায় তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়। আমেরিকায় আমাদের আউটসোর্সিংয়ের ক্লায়েন্ট অন্য দেশের তুলনায় বেশি। কীভাবে এটা আরও বাড়াতে পারি, সেটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।’
পলক বলেন, আমাদের দেশের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসোর্স ইনোভেশন সেন্টার স্থাপন করার বিষয়েও কথা হয়েছে। মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকার তাতে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বাংলাদেশের ডাক বিভাগের সঙ্গে আমেরিকার কীভাবে জি-টু-জি সহযোগিতা হতে পারে এবং আমেরিকার যে কোম্পানিগুলো আছে, বিশেষ করে অ্যামাজন, স্টারলিং, স্পেসএক্স, গুগল ও ফেসবুকের বিনিয়োগ কোন কোন ক্ষেত্রে আরও বেশি হতে পারে, সেগুলো নিয়ে কথা বলেছি।
‘সব মিলিয়ে বলতে পারি, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কী ধরনের সহযোগিতা পেতে পারি এবং একসাথে কীভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারি, রফতানি ও বিনিয়োগ বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়ে আমরা কথা বলেছি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমেরিকার প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে। গত পাঁচ বছরে এ খাতে আটশ’ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে। বাংলাদেশে এখন ওরাকল, মাইক্রোসফটসহ বেশ কিছু আইটি কোম্পানি কাজ করছে। আরও অনেক কোম্পানিকে বাংয়লাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আকর্ষণ করতে চাই। সর্বশেষ সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় প্রয়োজন, সেগুলো নিয়ে কথা হয়েছে।