ফিলিস্তিনি চিকিৎসক ও বেসামরিক নাগরিকের বেশে পশ্চিম তীরের জেনিন শহরের একটি হাসপাতালে ঢুকে তিন ফিলিস্তিনিকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে ইসরায়লের সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে গত ৮ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো মঙ্গলবার এই ধরনের ছদ্মবেশী অভিযান পরিচালনা করেছে।
হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, বাহিনীর প্রায় ১২ জন ছদ্মবেশে ইবনে সিনা হাসপাতালে ঢুকে পড়েছেন। সেখানে তিনজন নারীর বেশে আর দুজন ছিলেন চিকিৎসকের বেশে। তাঁরা অস্ত্র হাতে হাসপাতালের বারান্দা দিয়ে ছোটাছুটি করছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, জেনিন শহর ও এর আশপাশের শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দাদের সেবাদানকারী প্রধান একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ‘‘হামাসের সন্ত্রাসী সেল’’ রয়েছে। এই সেলকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতালে প্রবেশ করেছে।
হাসপাতালে হামলার ঘটনায় ইসরায়েলি বাহিনীকে জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। এই গোষ্ঠীর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদের জনগণ এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর বিরুদ্ধে দখলদারদের সংঘটিত অপরাধ বন্ধে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে জরুরিভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাদের এই অপরাধের জবাব দেওয়া হবে। তাঁরা সেখানে তিন ফিলিস্তিনিকে (পুরুষ) গুপ্তহত্যা করেছেন। সংগঠনটি বলেছে, ‘এসব হত্যাকাণ্ড হলো “গাজা থেকে জেনিন পর্যন্ত আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে দখলদারদের চলমান অপরাধের ধারাবাহিকতা”র অংশ।’ ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ‘কাপুরুষ’ শত্রুদের এই হত্যাকাণ্ডের কারণে ভয় পেয়ে যাবেন বা দুর্বল হয়ে পড়বেন, এমনটা ভাবার কারণ নেই বলে জানিয়েছে হামাস।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে স্বাস্থ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষ সুরক্ষা দেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন। ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাসপাতালের ভেতর এ হত্যাকাণ্ডকে ‘জঘন্য’ বলে মন্তব্য করেছে। পাশাপাশি এটিকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বলেও অভিহিত করেছে।