আদালত কক্ষে লোহার খাঁচা বসানো কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হিসেবে ঘোষণা করা হবে না এবং কেন লোহার খাঁচার পরিবর্তে কাঠগড়া পুনঃস্থাপন করার নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে সারাদেশে কোন কোন আদালতে এই ধরনের লোহার খাঁচা বিদ্যমান আছে তা জানিয়ে ৬০ দিনের মধ্যে আইন সচিবকে রিপোর্ট দাখিলে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা অপসারণ করতে সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী রিট দায়ের করেন। গত বছরের ১৬ অক্টোবর আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচার অপসারণ করতে সংশ্লিস্টদের লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়। ১০ আইনজীবী হলেন- জি.এম. মুজাহিদুর রহমান, মুহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন, মো. জোবায়দুর রহমান, মোহাম্মদ নোয়াব আলী, আজিমুদ্দিন পাটোয়ারী, মোহাম্মদ সাজ্জাদ সারোয়ার, মো. মুজাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন, মোহাম্মদ মিজানুল হক ও আবদুল্লাহ সাদিক।
রেজিস্ট্রি ডাকযোগে আইন সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবরে এ নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে বলা হয়, দেশি-বিদেশি আইন, আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান ও উচ্চ আদালতের নজিরগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায় আদালতে কাঠগড়ার পরিবর্তে লোহার খাঁচার ব্যবহার অমানবিক, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদ, আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান ও Principle of presumption of innocence-এর পরিপন্থি। মানুষের স্বাভাবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখতে ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আদালতে লোহার খাঁচার অপসারণ একান্ত প্রয়োজন।
এ অবস্থায় সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদসহ আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান অনুযায়ী মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নোটিশ পাওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচার অপসারণ করার অনুরোধ করা হয়। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় রিটটি দায়ের করা হয়।