চারদিকের এত অশান্তি, এত উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তাকে দূরে সরিয়ে সুখী হওয়া কি সহজ বিষয়? সূত্র মেনে কি আসলে সুখী হওয়া যায়? বাড়ি-গাড়ি, স্ত্রী-সন্তান, কাঙ্ক্ষিত পেশা ও উপার্জনসহ জীবনের প্রয়োজনীয় সবকিছু থাকা সত্ত্বেও অনেকের মধ্যে সুখের অভাব দেখা যায়। তাহলে সুখী হওয়ার উপায় কী?
সুখের সংজ্ঞা একেক জনের কাছে একেক রকমের। কারও কাছে স্বাধীনতাই মানে সুখ, আবার কারও কাছে সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকাটাই সুখ। সুখী হওয়া কতগুলো সহজ পন্থা আছে; যা কেউ অনুসরণ করলে সে সুখী হতে পারেন নিসন্দেহে। মাত্র কয়েকটি বিষয়ে যদি আমরা মনোযোগী হই তাহলে সুখ নামক বস্তুটি আমরা হাতের নাগালেই পেতে পারি। আসুন আমরা জেনে নিই, দৈনন্দিন জীবনে কী কী কাজ করতে পারলে মানসিক প্রশান্তির দেখা পাওয়া যাবে-
নিয়মিত মেডিটেশন করা
প্রতিদিন রুটিন করে মেডিটেশন করলে মন শান্ত থাকে। মানসিক চাপ মোকাবিলা করে মন-মেজাজ প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। মেডিটেশন আমাদের মস্তিষ্কের জন্য বেশ উপকারী। মেডিটেশনের ফলে চিন্তা-ভাবনা, উদ্বেগ কমে মাথা ঠান্ডা রাখে।
অনলাইন মাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকা: দিনের বেশিরভাগ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত থাকেন অনেকেই। নিউজফিড স্ক্রল করতে করতে অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করে সময় কাটালে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর চাপ পড়ে। তাই মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সচেতন থাকতে হবে। সারা দিন অনলাইনে না থেকে নির্দিষ্ট একটা সময় অনলাইনে থাকাই ভালো। এতে মানসিক চাপ কম পড়বে।
অন্যের সঙ্গে তুলনা না করা: নিজেকে অন্যের সঙ্গে কখনোই তুলনা করবেন না। নিজেকে যদি অন্যের তুলনা করেন, তা হলে কখনো সুখী হতে পারবেন না। অন্যের সঙ্গে তুলনার ফলে বিষণ্নতা সৃষ্টি হয়, আত্মবিশ্বাস কমে যায়, উদ্বেগ তৈরি হয়। মনে অস্থিরতা কাজ করে। এতে অশান্তি তৈরি হয়।
জীবনের লক্ষ্য ঠিক করা: লক্ষ্য ঠিক করার মাধ্যমে আপনাকে আপনার জীবনের একটি অর্থ ঠিক করতে হবে। অনেকে বেঁচে থাকার কোনো অর্থ খুঁজে পায় না। কিন্তু জীবনে লক্ষ্য ঠিক থাকলে বেঁচে থাকার অর্থ খুঁজে পাওয়া যাবে।
মানুষের জন্য খরচ করা: নিজের জন্য টাকা খরচ করার চেয়ে অন্যের জন্য খরচ করলে বেশি তৃপ্তি পাওয়া যায়। তাই চেষ্টা করুন অন্যের জন্য কিছু করা। কাছের মানুষকে পারলে ছোটখাটো উপহারের মাধ্যমে খুশি করতে পারেন।
নিজের জন্য পরিকল্পনা: বাস্তবসম্মত কোনো লক্ষ্য স্থির করে সেটি অর্জনের চেষ্টা করতে হবে। সুখী হতে হলে লক্ষ্যটি অর্জন করতেই হবে, এমনটি নয়। বরং সেই প্রচেষ্টার মধ্যেই সুখ খুঁজে পাওয়া যায়।
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া: স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। সুস্বাস্থ্যের জন্য ভালো খাবারের কোনো বিকল্প নেই। খাবার সরাসরি আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। শরীরে পুষ্টি জোগায় এবং শারীরিক কার্যাবলি সম্পাদনের নিয়ামক হিসেবে কাজ করে থাকে। ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি যেমন মেজাজ প্রফুল্ল রাখে, অন্যদিকে কার্বোহাইড্রেট খেলে সেরোটোনিন নামের একটি হরমোন নিঃসরণ হয় যা আমাদের সুখী অনুভূতি দেয়। এই কার্যকলাপ স্বাভাবিক রাখা হলে মানুষকে সুখী রাখতে সহায়তা করে।