নানা নাটকীয়তায় শেষ হয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচন শেষ হওয়ার দুইদিন পেরিয়ে গেলেও সরকার গঠন করা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। কারণ কোন দলই একক সরকার গঠন করার জন্য পর্যাপ্ত আসন পাইনি। তবে ২৬৫ আসনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ২৫১ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ইমরানের দল পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন। এরই মধ্যে পাকিস্তানি গণমাধ্যম জানিয়েছে ১৪ মামলায় জামিন পেয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী আদালত (এটিসি) ৯ মে দাঙ্গা সংশ্লিষ্ট ১২টি মামলায় ইমরান খানের জামিন মঞ্জুর করেছেন। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর এবং সেনা জাদুঘরে হামলা নিয়ে আরও দুই মামলায় তাকে জামিন দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে ইমরান সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পিটিআইয়ের নেতা শাহ মাহমুদ কুরেশি ১৩টি মামলায় জামিন পেয়েছেন।
জানা যায়, ইমরান ও মাহমুদ কুরেশির জামিন আবেদনের শুনানি করেন এটিসির বিচারক মালিক এজাজ আসিফ। আদালত বলেছেন, ইমরানকে গ্রেপ্তার করে রাখার কোন এখতিয়ার নেই। ৯ মে দাঙ্গা সংশ্লিষ্ট মামলায় সব আসামি জামিনে রয়েছেন।
গত ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজিরা গেলে গ্রেপ্তার হন ইমারান খান। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সারাদেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিক্ষোভ থেকে হামলা হয় সেনা স্থাপনায়। এসব দাঙ্গার ঘটনায় ইমরান খানের নামে বেশ কয়েকটি মামলা দেওয়া হয়।
অবশ্য ২০২২ সালে সংসদে অনাস্থা ভোটে হেরে সরকার থেকে বিদায় নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক আইনি জটিলয়তায় পড়ছেন ইমরান খান। তার নামে প্রায় ২০০ মামলা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি চার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ইমরানকে ৩৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ১০ বছরের জন্য তাকে নির্বাচনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে পিটিআই ও ইমরান-সমর্থকদের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে এসব সাজা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কারাগারে বন্দি তিনি।
নির্বাচনে না দাঁড়ালেও জনগণের মাঝে ইমরান খান ও তার দল পিটিআয়ের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। এই জনপ্রিয়তা যে শুধু সামাজিক মাধ্যমে সীমাবদ্ধ নয়, তা ৮ ফেব্রুয়ারির ভোটে পাকিস্তানিরা প্রমাণ করে দেখালেন। ফলে এবারের ভোটে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বেশ ভালো করেছেন।
তবে ফল ঘোষণা যত শেষের দিকে নির্বাচন ঘিরে সমীকরণ তত জটিল থেকে জটিল হচ্ছে। পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও সরকার গঠন করতে পারবে কি না, সে প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।