ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলের অবিরাম হামলায় বাদ যায়নি অঞ্চলটির স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জার পাশাপাশি হাসপাতালো। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সঙ্গে ইসরাইলের চলমান যুদ্ধ ১৫১ দিনে পা দিয়েছে। যুদ্ধে এ পর্যন্ত নারী-শিশুসহ ৩০ হাজার ৫৩৪ জন ফিলিস্তিনি হয়েছেন।
ভেঙে পড়েছে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। দেখা দিয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। পরিস্থিতি এতোটাই অমানবিক যে, গাজার উত্তরাঞ্চলের শিশুরা মারা যাচ্ছে অনাহারে। এমন তথ্যই জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস।
ত্রাণবাহী গাড়ি প্রবেশ করতে না পারায় খাদ্য ও ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে গাজায়। ডব্লিউএইচও প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, উত্তর গাজায় শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে। সপ্তাহের শেষ দিকে সংস্থাটির পক্ষে থেকে গাজার আল-আওদা এবং কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিদর্শনের তার সংস্থা। গত বছরের অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম গাজার কোনো হাসপাতাল পরিদর্শন করা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া একটি পোস্টে টেড্রোস লিখেছেন, খাবারের অভাবের ফলে ১০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে এবং গাজার শিশুরা ‘গুরুতর মাত্রায় অপুষ্টির’ শিকার হয়েছে। হাসপাতাল ভবনগুলোও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস আরও বলেছেন, উত্তর গাজায় মারাত্মক মাত্রায় অপুষ্টি রয়েছে, শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে, জ্বালানি, খাদ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের গুরুতর ঘাটতি রয়েছে এবং হাসপাতাল ভবনগুলোও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। গাজার এই অঞ্চলে আনুমানিক ৩ লাখ মানুষ খুবই অল্প খাদ্য বা বিশুদ্ধ পানি নিয়ে বসবাস করছে।
গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত রোববার (৩ মার্চ) জানায়, কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে অন্তত ১৫ শিশু মারা গেছে। ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা গতকাল সোমবার (৪ মার্চ) জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের একটি হাসপাতালে গত রোববার ১৬তম শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
ডব্লিউএইচও’র প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস জানান, যুদ্ধ শুরুর পর গত কয়েক মাস ধরে গাজার উত্তরাঞ্চলে প্রবেশের চেষ্টা করার পর ডব্লিউএইচও’র এটাই ছিল প্রথম সফর।
এদিকে ইসরায়েল গাজার ওপর কঠোর অবরোধ আরোপ করে রেখেছে এবং এই পদক্ষেপ গাজার ফিলিস্তিনিদের বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের অনাহারের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।