চলচ্চিত্রের সোনালি সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পারভীন সুলতানা দিতি ২০১৬ সালের ২০ মার্চ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে যান। আজ তাঁর অষ্টম মৃত্যুবাষির্কী।
সোনারগাঁ পৌরসভার দত্তপাড়া গ্রামের মেয়ে পারভীন সুলতানা দিতি। ছোটবেলা থেকেই তিনি সংগীতের সাথে জড়িত ছিলেন। স্কুলজীবনে স্থানীয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দিতি ছিলেন পরিচিত নাম। গান গেয়ে সোনারগাঁয়ের দর্শকদের মন জয় করেছেন তিনি।
বিটিভিতে গান করার সুবাদে অভিনেতা আল মনসুরের নজরে আসেন দিতি। তিনিই দিতিকে নাটকে অভিনয়ের কথা বলেন এবং ‘লাইলি মজনু’ নাটকে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। এই নাটকে দিতির অভিনয় দারুণ প্রশংসিত হয়। কিন্তু তার পরিবার অভিনয়ে বাধা দেয়।
কিন্তু মনের ভেতর থেকে অভিনয়ের প্রতি একটা ভালো লাগা তৈরি হয় দিতির। কিছু দিন পরেই তিনি ‘ইমিটেশন’ নামক নাটকে অভিনয় করেন। তারপর ১৯৮৪ সালে নতুন মুখের সন্ধানে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সিনেমায় আসেন দিতি। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা উদয়ন চৌধুরী পরিচালিত ‘ডাক দিয়ে যাই’। কিন্তু ছবিটি শেষ পর্যন্ত মুক্তি পায়নি। দিতি অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবি ছিলো ‘আমিই ওস্তাদ’।
১৯৮৫ সালে আমজাদ হোসেনের ‘হীরামতি’ সিনেমায় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়েই প্রেমে পড়েন দুজন। পরে তারা দুজনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৮৭ সালে জন্ম নেন মেয়ে লামিয়া চৌধুরী আর ১৯৮৯ সালে জন্ম নেন ছেলে দীপ্ত। যদিও সোহেল চৌধুরী-দিতির সংসার স্থায়ী হয়নি। তারপর ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাত দুইটার দিকে বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবে খুন হন সোহেল চৌধুরী। পরে দিতি তার সর্বাধিক চলচ্চিত্রের জুটি ইলিয়াস কাঞ্চনকে বিয়ে করলেও সে বিয়েও স্থায়ী হয়নি। আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে এ সংসারেও।
দিতি অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো : ‘হীরামতি’, ‘দুই জীবন’, ‘ভাই বন্ধু’, ‘উছিলা’, ‘লেডি ইন্সপেক্টর’, ‘খুনের বদলা’, ‘দুর্জয়’, ‘আজকের হাঙ্গামা’, ‘স্নেহের প্রতিদান’, ‘শেষ উপহার’, ‘চরম আঘাত’, ‘স্বামী-স্ত্রী’, ‘অপরাধী’, ‘কালিয়া’, ‘কাল সকালে’, ‘মেঘের কোলে রোদ’, ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’, ‘মুক্তি’, ‘কঠিন প্রতিশোধ’, ‘জোনাকীর আলো’, ‘তবুও ভালোবাসি’, ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী’, ‘হৃদয় ভাঙা ঢেউ’, ‘মাটির ঠিকানা’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ ইত্যাদি।