পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ছাত্রী শারভীন সুলতানা মীম (২৬) ভাড়া বাসার নিজ কক্ষে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে পাবনা শহরের মুনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রওশন আলী বলেন, খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠায়। পরে বাসাটি থেকে ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার বাবা-মাকেও খবর দেওয়া হয়েছে এবং তারা আসার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছাত্রীর স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। কি কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহত ছাত্রী মেহেরপুরের সালদা থানার এলাকার আজিজুল ইসলামের মেয়ে।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘শারভিন সুলতানা পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ১০ ব্যাচের শিক্ষার্থী। খবর পেয়ে আমরা পুলিশসহ ঘটনাস্থলে যাই। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরিবারের লোকজনকে খবর পাঠানো হয়েছে।’
নিহতের স্বামীর নাম আসিফ মোর্শেদ। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও উন্নয়ন পরিকল্পনা বিবাহের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার পূর্ব এখলাসপুরের আবদুল মালেকের ছেলে তিনি।
বাড়ীর মালিকের স্ত্রী মেরিনা ইসলাম জানান, ২ মাস আগে ঐ ছাত্রীর স্বামী এই বাসাটি ভাড়া নেন। তবে তারা সেখানে নিয়মিত থাকতেন না। গতকাল রাতে নিহতের স্বামী বাসায় ছিলেন না, তিনি ঢাকায় ছিলেন। সকাল সাড়ে নয়টায় তার স্বামী ঢাকা থেকে আসলে ঐ ফ্ল্যাটে যান। ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন দরজা বন্ধ। দরজা ধাক্কাধাক্কির পরেও না খুললে সবার সন্দেহ হয়। পরে পুলিশকে ফোন দিলে তারা ফায়ার সার্ভিসকে নিয়ে এসে দরজা ভাঙলে নিহতকে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
নিহতের সহপাঠীরা জানান, নিহত ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের ৪০৯ নাম্বার রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। বিয়ের পর থেকে সে কখনো হলে থাকতেন কখনো স্বামীর সাথে মনসুরাবাদে থাকতেন। বিয়ের পর কারো সাথে তেমন কিছু শেয়ার করতেন না। হঠাৎ করে এই ঘটনায় তারা বিস্মিত হয়েছেন। তারা এই ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু প্রশাসনকে সেটি তদন্ত করে বের করার অনুরোধ জানান।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাসা থেকে ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছাত্রীর স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত ছাত্রীর বাবা-মাকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কি কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।