ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালানোর জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ। এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র বলছে, গাজায় মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েল হয়তো আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।
শনিবার (১১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা যুদ্ধের সময় কিছু ক্ষেত্রে আমেরিকার সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে।
আর স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, এটি ‘মূল্যায়ন করা যুক্তিসঙ্গত’ যে, যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত অস্ত্রগুলো ব্যবহারের বিষয়ে ইসরায়েলের কিছু বাধ্যবাধকতা থাকলেও সেগুলো ‘অসঙ্গতিপূর্ণ’ উপায়ে ব্যবহার করা হয়েছে।
অন্যদিকে বিবিসি বলছে, বিলম্বের পর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে এই রিপোর্ট পেশ করা হয়। হোয়াইট হাউসের নির্দেশিত পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশটি কীভাবে গত বছর সংঘর্ষের শুরু থেকে মার্কিন সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবহার করেছে।
যদিও গাজায় অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলে এটিতে নিশ্চিতভাবে বলা হয়নি।ইসরায়েলকে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ‘অসাধারণ সামরিক চ্যালেঞ্জ’ মোকাবিলা করতে হয়েছিল বলেও এতে বলা হয়েছে। এমনকি এতে আরও বলা হয়েছে, মার্কিন অস্ত্রের আইনি ব্যবহার মেনে চলার বিষয়ে ইসরায়েলের কাছ থেকে পাওয়া আশ্বাস ছিল ‘বিশ্বাসযোগ্য এবং নির্ভরযোগ্য’ এবং তাই (ইসরায়েলে) অস্ত্রের চালান অব্যাহত রাখা যেতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য ইসরায়েলের প্রচেষ্টাকে ‘অসঙ্গত, অকার্যকর এবং অপর্যাপ্ত’ বলে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ এবং মানবিক সংস্থাগুলো। সংঘাতের প্রথম মাসগুলোতে গাজায় মানবিক সহায়তা ‘বাড়ানোর’ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার সাথে পুরোপুরি সহযোগিতা করেনি ইসরায়েল। তবে এতে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি সরকার গাজায় মার্কিন মানবিক সহায়তা পরিবহন বা বিতরণ নিষিদ্ধ বা অন্য কোনোভাবে সীমাবদ্ধ করছে বলে আমরা এখন মূল্যায়ন করছি না।’
বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিবেদনটি এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো যার কয়েকদিন আগেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, রাফাহতে হামলা করলে ইসরায়েলে কিছু অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
গেল বছর থেকে টানা সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি।