ভারতের পেট্রাপোল ঘেঁষে নির্মিত দীর্ঘপ্রতিক্ষীত দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোলে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪১ একর জমিতে নির্মাণ হয়েছে অত্যাধুনিক কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল। এ টার্মিনালে একসঙ্গে দেড় হাজার পণ্যবাহী ট্রাক পার্কিংসহ নানা সুবিধা পাওয়া যাবে।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন কার্গো-ভেহিকেল টার্মিনালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
এতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যেমন গতিশীল হবে, তেমনি রাজস্ব আহরণও দ্বিগুণ বাড়বে। টার্মিনালটি নির্মাণে কাজ করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এসএসআর গ্রুপ।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, সরকার ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের পাশে বেনাপোল বন্দরে ৪১ একর জায়গায় বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু করে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল নির্মাণ। এখানে একসঙ্গে পণ্যবাহী দেড় হাজার ট্রাক পার্কিং, ট্রাকচালকদের জন্য অত্যাধুনিক তিনটি টয়লেট কমপ্লেক্স ও থাকা, খাওয়ার সু-ব্যবস্থায় ব্লাক বিল্ডিং, ফায়ার সার্ভিস, কেমিকেল শেড থাকছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সামসুর রহমান জানান, টার্মিনালটিতে সেবাটি শুরু হলে বন্দরে চলমান নানা সমস্যার ৯০ শতাংশ সমাধান হবে। বাণিজ্য সুবিধা বাড়াতে রাজস্বও আগামীতে দ্বিগুণ বাড়বে। এটি সরকারের এ যাবৎকালের বেনাপোল বন্দরে সবচেয়ে বড় প্রকল্প।
ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট এক্সপোর্ট কমিটির পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, আগে দিনে ৬০০ থেকে ৭০০ ট্রাকে পণ্য আমদানির চাহিদা থাকলেও জায়গার অভাবে ৩০০ থেকে ৪০০ ট্রাকের বেশি পণ্য আমদানি সম্ভব হতো না। রাসায়নিক পণ্যগারের অভাবে প্রায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ছাড়াও ব্যবসায়ীরা বিভিন্নভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছিলেন। এক্ষেত্রে দাবি ছিল জায়গা অধিগ্রহণ করে বন্দর আধুনিকায়নের। বাণিজ্যিক গুরুত্ব বিবেচনা করে অবশেষে সরকার বেনাপোল বন্দরে কার্গো-ভেহিকেল টার্মিনাল তৈরি করেছে। টার্মিনালটিতে সেবা শুরু হলে বন্দরে চলমান সমস্যার অনেকটা সমাধান হবে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান বলেন, ‘প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার আমদানি ও ১০ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি বাণিজ্য হয়। বন্দর আধুনিকায়ন হয়েছে, এতে আমরা খুশি। এটির সেবা শুরু হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যেমন গতিশীল হবে, তেমনি রাজস্ব আহরণ দ্বিগুণ বাড়বে। ’