কোরবানির জন্য ঋণ নেওয়া যায় কি

পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর জন্য ত্যাগ ও আনন্দের এক পবিত্র উৎসব। এই দিনে কোরবানি বা কোরবানি হলো হজরত ইবরাহিম (আ.)–এর ত্যাগের স্মারক এবং ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ। কিন্তু আর্থিক সংকটে থাকা অনেক মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে, যদি কোরবানির জন্য পর্যাপ্ত অর্থ না থাকে, তাহলে কি ঋণ নিয়ে কোরবানি করা যাবে? এই কোরবানি কি বৈধ হবে, নাকি নিজের অর্থ দিয়েই এটি করতে হবে?
কোরবানি সুন্নাহ
ইসলামে কোরবানি একটি সুন্নত। এটি শুধু তাঁদের জন্য প্রযোজ্য, যাঁদের আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। বিধান হিসেবে বলা যায়, স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন, সাবালক মুসলিম যদি কোরবানি ঈদের তিন দিন (১০ জিলহজ সকাল থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগপর্যন্ত) জাকাত পরিমাণ সম্পদের মালিক (সাড়ে ৭ ভরি সোনা বা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা অথবা এর যেকোনো একটির মূল্যের সমপরিমাণ নগদ অর্থ বা ব্যবসার পণ্যের মালিক) থাকেন বা হন, তাঁর জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব। (আলমুহিতুল বুরহানি ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫)
এর মানে সামর্থ্য থাকলেও দিতে হবে, এমন বাধ্যতামূলক নয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের বাইরে দায়িত্ব দেন না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৮৬)
ফিকহের জবাব
আল–আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক ফিকহের অধ্যাপক ড. আবদুল ফাত্তাহ ইদ্রিসের মতে, কোরবানি শুধু আর্থিকভাবে সামর্থ্যবানদের জন্য। যাঁদের সামর্থ্য নেই তাঁদের কোরবানি দেওয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তাই কোরবানির জন্য ঋণ নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। ঋণ নিয়ে কোরবানি দেওয়া নিষিদ্ধ না হলেও এটি করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই এবং এটি উৎসাহিতও করা হয় না। কারণ, ইসলাম মানুষকে অপ্রয়োজনীয় আর্থিক চাপে ফেলতে নিরুৎসাহিত করে।