অপারেশনের পর পেটে কাঁচি রাখা মামলায় রাজা ডাক্তার জেল হাজতে

ফারুক আহমেদ,মেহেরপুর প্রতিনিধি

মেহেরপুরের গাংনীর রাজা ক্লিনিকের মালিক ডাক্তার পারভিয়াস হোসেন রাজাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত। বাঁচেনা খাতুন নামের এক রোগীর পেটে কাঁচি রাখা সংক্রান্ত মামলায় রোববার দুপুরে মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তারিক হাসান তার জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজাতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জানা গেছে,২০০২ সালে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের গৃহবধু বাচেনা খাতুনের পিত্তথলির অপারেশন করা হয় গাংনীর রাজা ক্লিনিকে। বাচেনা খাতুনের অপারেশন করেন চিকিৎসক মিজানুর রহমান। তার সহকারী হিসেবে ছিলেন ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা ও অ্যানেস্থেসিয়া করেন ডা. তাপস কুমার। অপারেশন করার পর সুস্থ্য হওয়া তো দুরের কথা দিন দিন বাচেঁনা খাতুনের পেটের যন্ত্রনা বাড়তেই থাকে পেটের ব্যথার অসহ্য যন্ত্রনায় বছরের পর বছর বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে ছুটেছেন তিনি। চিকিৎসা করাতে গিয়ে শেষ সম্বল ১০ কাঠা জমি বিক্রি সহ খুইয়েছেন অর্থ সম্পদ সব কিছু তবুও ভালো হয়নি।

যন্ত্রনা শেষ পর্যন্ত সইতে না পেরে গত ২রা জানুয়ারী রাজশাহী মেডিকেল কলেজের নিউরোমেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ রেজা নাসিমের কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে তার পরামর্শে এক্স-রে করানো হয়। এক্স-রে রিপোর্টে পেটের মধ্যে ৪/৫ ইঞ্চি’র একটি কাঁচির সন্ধান মেলে।

এরপর গত ১০ জানুয়ারী চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারী মো: ওয়ালিউর রহমান নয়ন অপারেশনের মাধ্যমে বাচেনা খাতুনের পেট থেকে কাঁচি বের করে।

এ সংক্রান্ত সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশিত হওয়ার পর চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তারিক হাসান স্বপ্রনোদিত হয়ে একটি মামলা করেন ও মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) অপু সারোয়ারকে ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশ দেন।

অপরদিকে মেহেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে গত ৫ জানুযারী গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো: আশরাফুজ্জামান লিটনকে প্রধান ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারী মো: ফজলুর রহমান,মেহেরপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক ফয়সাল হারুনকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

উভয় তদন্ত কমিটি চিকিৎসক মিজানুর রহমানকে প্রধান আসামী করে প্রতিবেদন জমা দেন। অন্যান্য আসামীরা হচ্ছেন- অ্যানেস্থেসিয়া ডা. তাপস কুমার ও ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা।

উক্ত মামলায় রোববার দুপুরে অভিযুক্তরা আদালতে জামিন নিতে গেলে আদালত ডা: মিজানুর রহমান ও ডা, তাপস কুমারকে জামিন প্রদান করলেও ডাক্তার পারভিয়াস হোসেন রাজার জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোট পুলিশ পরিদর্শক গোলাম মোহাম্মদ।

 

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button