সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন 

আব্দুল জলিল, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামে সাতসকালে আপন ছোট ভাইয়ের হাতে বড় ভাই খুন হয়েছে। খুনের পর থেকে ছোটভাই পালিয়ে যাওয়ায় পুলিশ এখনও ছোট ভাইকে আটক করতে পারেনি।

শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ-ওসি ওয়াহিদ মুর্শেদ জানান, মাহমুদপুর গ্রামের শেখ মুনসুর আলীর বড় ছেলে শেখ লোকমান হোসেনের সাথে ছোট ছেলে শেখ মোশাররফ হোসেনের জমিজমা ও সম্পতি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এ ঘটনা নিয়ে রবিবার ভোরে ছোটভাই মোশাররফ ধারালো অস্ত্র দিয়ে বড়ভাই লোকমান(৫০)কে উপুর্যপুরি কুপিয়ে খুন করে। এরপর সেখান থেকে সে দ্রুত পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় লোকমানকে উদ্ধার করে শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। লাশ প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।এঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। কাউকে আটকও হয়নি তবে পুলিশ মোশাররফকে খুঁজছে।

স্থানীয় সোনার মোড় বাজার সমিতি’র সভাপতি পলাশ খান জানান, লোকমান-মোশাররফের বাবা মুনসুর শেখের মাহমুদপুরে জমি ও সহায় সম্পদ এবং সোনারমোড়ে দোকানপাটও রয়েছে। ছোট মোশাররফের স্ত্রী কয়েক বছর ধরে স্বামীর অমতে ওমানে গৃহকর্মী হিসেবে চাকুরী করছে। মোশাররফের ১১ ও ৭ বছর বয়সী দুটি সন্তান রয়েছে। স্ত্রী চলে যাওয়ার পর থেকে মোশাররফ নানা ধরনের অস্বাভাবিক আচরণ করতো। তাছাড়া মাদকসেবীও হয়ে পড়ে। মাঝে মাঝেই বিভিন্ন ইস্যুতে বিভক্ত হওয়ার জন্য সম্পত্তি ও জমি নিয়ে বিরোধ করতো। বড় ভাই তার পরিবারের বিরুদ্ধে ঝাড়ফুঁক করেছে এমন অভিযোগ ছড়াতো।

রবিবার (আজ) সকালে এরই জের ধরে সোনারমোড় সংলগ্ন মসজিদ থেকে ফজরের নামাজ আদায় শেষে বড়ভাই লোকমান শেখ বের হওয়া মাত্র পিঠে ও বুকে উপুর্যপুরি কুপিয়ে মোশাররফ শেখ সেখান থেকে সরে পড়ে। লোকমানের শরীর থেকে ব্যাপক রক্তপাত হয় সেখানে।  এরপর স্থানীয়রা লোকমানকে উদ্ধার করে শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডাঃ শিরউজ্জামান জানান, পথেই অধিক রক্তপাতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তার বুকে পিঠে কোপ রয়েছে।

নিহতের পুত্র আল আমিন জানান, তার পিতা ভাংড়ির ব্যবসা করে। ঘটনার দিন ভোরের দিকে ভ্যান নিয়ে বাজারের যাওয়ার সময় উভয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে মোশারফ বড় ভাইয়ের পিঠে ও বুকের মধ্যে দায়ের কোপ বসিয়ে দেয়। দ্রুত উদ্ধার করে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।

আরোও পড়ুন : বিয়ের গাড়ি ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ, সংঘঘর্ষে আহত ১৫ !

 আল আমিন আরও জানান, তার পিতা বৃদ্ধ দাদাকে দেখভাল করে থাকেন। কিন্তু মেজ চাচা মোশারফ বিষয়টি সহ্য করতে পারে না এবং বাড়িতে ভ্যান রাখতে নিষেধ করে। তাছাড়া দাদার বাড়িতে না যাওয়ার জন্য তার পিতাকে নিষেধ করে। এবং নানা বিষয়ে সব সময় তাদের সাথে তার মেজ চাচা মোশাররফ বিরোধ করে ঝগড়া গন্ডগোল পাকাতো।

 

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button