বাবা খুনের ২৯ বছর পর খুনিদের বিচার পেলেন উকিল ছেলে! 

আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর(গাজীপুর)প্রতিনিধি

২৯ বছর পর মামলার রায়, ২ জনের আমৃত কারাদণ্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন! মামলার বাদী,তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ৫জন আসামি ইতোমধ্যে মারা গেছেন।

খুনের ঘটনার দীর্ঘ ২৯ বছর পর মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরের দিকে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক বাহাউদ্দিন কাজী রায় প্রদান করেন।

বিগত ১৯৯৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের ১ নং সিএন্ডবি এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধীতার জের ধরে ঘরে ঢুকে গুলি করে খুন করা হয় স্থানীয় ধনাই ব্যাপারীর ছেলে সুলতান উদ্দিনকে। একই ঘটনায় আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়। এই ঘটনায় পরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের হয়। নিহতের ভাই মোঃ মোতাহার হোসেন বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আদালত ১৩ আসামির মধ্যে আবুল কাশেম বেপারি ও মাঈন উদ্দিন বেপারিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড, ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও গিয়াস উদ্দিন নামে ১ জনকে মামলা থেকে খালাস দেয়। ইতিমধ্যে মারা গেছেন মামলার বাদী, তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বিবাদীদের অনেকেই। বিচারকার্যে দীর্ঘসুত্রিতার প্রচলিত পরিস্থিতিতেও শেষ পর্যন্ত বিচার পেয়ে সন্তুষ্ট বাদির পরিবার।

আসামিদের মধ্যে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, ময়ের উদ্দিন বেপারী, মোমেন, মোস্তফা, আব্দুল ওয়াহাব ও হানিফা। রায় ঘোষণার পর বেঁচে থাকা সাজাপ্রাপ্ত  আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার বাদি মোতাহার হোসেন বেপারী প্রায় ১২ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। এরপর সেই মামলা পরিচালনা করেন খুন হওয়া ব্যক্তির ছেলে মুস্তাফিজুর রহমান। ঘটনার সময় মুস্তাফিজুর রহমানের বয়স ছিল ছয় বছর। বাবাকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা বুঝতে পারার বয়স হওয়ার পর তিনি আইনজীবী হতে সংকল্প করেন। এরপর আইনজীবী হয়ে সনদ পাওয়ার পর দীর্ঘ বছর ধরে মামলা পরিচালনা করেন।

এ বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অবুঝ অবস্থায় তার বাবাকে গুলি করতে হত্যা করতে দেখেছেন। বড় হয়ে সব কিছু জানার পর বাবার হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে তিনি নিজেকে আইনজীবী হিসেবে গড়ে তুলেছেন। শেষ পর্যন্ত ২৯ বছর ১ মাস পর তার বাবার হত্যার বিচার পেয়েছেন। এই রায়ের মধ্য দিয়ে বাবার হত্যার বিচার পেয়ে তিনি সন্তুষ্ট। একই সঙ্গে সন্তুষ্ট বাদীর পরিবারের প্রত্যেক সদস্য। তবে বিচারের এই দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়ার দাবি করেন তিনি।

 

 

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button