মা লিপি আক্তার একজন সংগ্রামী নারী। লেখাপড়ার প্রতি ইচ্ছা থাকা সত্তে¡ও বাবার অর্থকষ্টে বেশির দূর এগুতে পারেনি তাঁর লেখাপড়া। ২০০২ সালে নাটোরের সিংড়ার উপজেলার সোনাপুর গ্রামের বাসিন্দা সিট কাপড় ব্যবসায়ী লোকমান হোসেনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। ভালই চলত তাদের ছিল সংসার। নিজের ইচ্ছার কথা স্বামীকে শুনাতেই ভর্তি করিয়ে দেন চককালিকাপুর কারিগরী স্কুল এন্ড কলেজে। হঠাৎ ঝড় আসে সংসারে। স্বামী জটিল ক্যান্সারে রোগে আক্রান্ত হয়। চিকিৎসা খরচ ও সংসার চালাতে হারাতে হয় একমাত্র ভিটাবাড়ীও। স্বামীর অসুখে নিজ ননদের কাছে বিক্রি করা টিনের বাড়ীতে থাকেন। স্বামী মারা যাওয়া পর তিন সন্তানকে মানুষ করতে থেমে পড়েন নিজেই। এলাকাতে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত লাভ করে। মানুষের ভালবাসায় চামারী ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ ওয়ার্ডের একজন নারী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হোন। লিপির তিন সন্তানের বড় মেয়ে লীমা খাতুন এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে ও ছোট মেয়ে লিমা খাতুন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছেন। এবার এসএসসিতে ছেলের সাথে পরীক্ষায় মা লিপি খাতুন। পরীক্ষায় ফলাফলে ছেলে জিপিএ-৫ ও মা জিপিএ -৫.৫৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।
মা জানান, আমার লালিত স্বপ্ন স্বামী ইচ্ছেতে পূরর্ণ হয়েছি। আমি খুশি হয়েছি আমার ছেলে জিপিএ-৫ পেয়েছে। বসতভিটা ও জমিজমা বলতে আমার কিছুই নাই। তিন সন্তানকে মানুষ করতে তাদের লেখাপড়ার খরচ বহন করতে আর পারছি না। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান।
ভস্কপপঃ ০১। লিপি আক্তার।মা।
ছেলে জানান, আমার মা একজন সংগ্রামী নারী। সংসারের অভাব কষ্ট কখনও বুঝতে দিতেন না। আমাদের পড়াশনায় বসতে দিয়ে তিনি পড়তেন। ফল প্রকাশে মা পাস করেছে এমন খবর পাওয়া মাত্রই খুশি হয়েছি।।
মেয়ে জানান, ভাইয়ের পাসের সাথে মায়ের পাসের খবর শুনে খুবই খুশি হয়েছি। আমি ও আমার পরিবার খুবই খুশি হয়েছি।
এলাকার প্রতিবেশি জানান, আমরা জানতাম ছেলের সাথে মায়ের পরীক্ষা দেওয়ার খবর। ফল প্রকাশে ছেলের সাথে মায়ের পাসের খবর। আমরা এতে খুশি ও গর্বিত।
চক কালিকাপুর টেনিক্যাল ইন্সটিটিউট স্কুল এন্ড কলেজ গর্ভনিং ম্যানেজিং কমিটির এ সদস্য জানান, মা ও ছেলের এমন পাসের খবওে আমরা খুবই খুশি হয়েছি। ছেলের মা আমাদের এখান থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে। তাকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছিল।
চামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, তারা বড়ই অসহায় পরিবার। লিপি খাতুন পরিষদের একজন সদস্য হলেও তাকে পরিষদ থেকে সার্বিক সহায়তা করা হয়েছে। এপরিবারকে উৎসাহ দিতে এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।