আন্তর্জাতিকবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

সূর্যের দিকে যাচ্ছে ভারতের মহাকাশযান আদিত্য

মোহনা অনলাইন

ভারত তার প্রথম সূর্যাভিযান শুরু করেছে। দেশটির প্রথম সূর্য পর্যবেক্ষণ মিশন ‘আদিত্য-এল ১’শনিবার (০২ সেপ্টেম্বর) শ্রীহরিকোটা থেকে স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে উৎক্ষিপ্ত হয়।

আদিত্য সূর্যের আরেক নাম। মহাকাশে দীর্ঘ এক মাস নয় দিনের যাত্রা শেষে ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ চাঁদের বুকে অবতরণ বা ‘সফট ল্যান্ডিং’য়ের প্রথম লক্ষ্য সফলভাবে অর্জন করছে, যা ভারতকে জায়গা করে দিয়েছে বিশ্বের এলিট‘স্পেস ক্লাবে’।

মহাকাশযানটির চাঁদে পৌঁছাতে ৪০ দিন সময় লাগবে বলে ধারনা করা হয়েছিল। এটি অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটা উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে চাঁদের দিকে রওনা দিয়েছিল। একটি এলভিএম-৩ রকেট দিয়ে চাঁদের উদ্দেশ্যে চন্দ্রযানটিকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল বলে জানা যায়।

বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অবতরণের দিক থেকে প্রথম দেশ হিসাবে জায়গা করে নেয় ভারত। অবসান হয় কোটি কোটি ভারতবাসীর অধীর উৎকন্ঠা নিয়ে টেলিভিশনের সামনে বসে অপেক্ষা। যেখানে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর দেওয়া অভিযানের প্রতিটি মুহুর্তর আপডেট সম্প্রচার করা হচ্ছিল লাইভে।

এটি চাঁদের উদ্দেশ্যে ভারতের প্রথম, দ্বিতীয় নয় , তৃতীয় অভিযান। এর ঠিক আগের অভিযানে ২০১৯ সালে চাঁদের মাটির ছোঁয়া পায়নি দক্ষিন এশিয়ার এ দেশটি। ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ভারতের পাঠানো ল্যান্ডার-রোভারটি। তবে চন্দ্রযান-২-এর সেই অরবিটার প্রদক্ষিণ করে চলেছিল চাঁদকে এবং তথ্য পাঠিয়ে চলেছিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থাকে। এরই ফলসরূপ রবিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) চাঁদের দক্ষিন মেরুতে ভারতীয়দের পদচারন।

চন্দ্রযান-৩ এর সফল অবতরণের পেছনে বিজ্ঞানীদের কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি কাজ করেছে প্রায় ১৪০ কোটি মানুষের প্রার্থনাও। ইসরোর ১৬ হাজার ৫০০ বিজ্ঞানী গত চার বছর ধরে যে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন, তা সম্পূর্ণ হয়েছে। এবার আসল কাজ শুরু হতে যাচ্ছে বিজ্ঞানীদের। প্রথম এক ঘন্টা বিজ্ঞানীরা যানটির দিকে বিশেষ নজর রাখলেও পরবরতীতে চাঁদের জলের পাশাপাশি খনিজ সম্পদের অনুসন্ধান করবেন বলে জানিয়েছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।

সূর্যের বায়ুমণ্ডল সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করবে আদিত্য। পরবর্তী চার মাস ধরে যাত্রা করে সূর্য আর পৃথিবীর মধ্যে একটি ‘হ্যালো’ কক্ষপথের ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট বা এল১ পয়েন্টে স্থাপন করা হবে আদিত্যকে । ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্টকে সূর্যের পথে যাওয়ার মাঝে একটি পার্কিং লট বলে বর্ণনা করা হয়।

মিশনের খরচ কত হবে তা ইসরো জানায়নি, তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলি বলছে সূর্যাভিযানের জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় পৌনে চারশো কোটি ভারতীয় টাকা।

ইসরো বলেছে, অরবিটারে সাতটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র রয়েছে যা সৌর করোনা (সবচেয়ে বাইরের স্তর) ফটোস্ফিয়ার (সূর্যের পৃষ্ঠ বা যে অংশ আমরা পৃথিবী থেকে দেখি) এবং ক্রোমোস্ফিয়ার (প্লাজমার একটি পাতলা স্তর যা ফটোস্ফিয়ার এবং করোনার মধ্যে থাকে), তিনটি অংশেই নিবিড় পর্যবেক্ষণ চালাবে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button