প্রত্যেক মুসলিম আমলের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করেন। আমল এবং আল্লাহর ভয় মানুষকে পরকালে মুক্তি দেবে এবং আল্লাহর শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে। মানুষ যেসব আমল করে থাকে এরমধ্যে আল্লাহ তায়ালার কাছে সব থেকে প্রিয় হলো নিয়মিত যে আমল করা হয়।
আল্লাহর কাছে প্রিয় আমল, আম্মাজান হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘আল্লাহর কাছে কোন আমল সর্বাধিক প্রিয়?’ তিনি উত্তর দিলেন, চাই তা কম হোক’ ‘যে আমল র্সবদা করা হয় (বুখারি, হাদিস, ৬৪৬৫)।
মানুষ নিয়মতি কোনো আমলে অভ্যাস করে নিলে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য বিশেষ পুরস্কার রেখেছেন। আমলের অভ্যাস করে নেওয়ার পর কোনো কারণে সেই আমল করতে না পারলে তার জন্য আমল করা পরিমাণ সওয়াব লেখা হয়।
এ বিষয়ে হজরত আবু মূসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন বান্দা অসুস্থ হয় অথবা সফরে থাকে, তখন তার জন্য ওই আমলের মতই (সওয়াব) লেখা হয়, যা সে ঘরে থেকে সুস্থ শরীরে আমল করতো।’ (বুখারি)
হাদিসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, যখন কোনো মানুষের অভ্যাস হয়ে যায় যে, সে সুস্থ ও অবসর অবস্থায় কোনো নেক আমলের অভ্যাস করে নেয়, এরপর সে অসুস্থ হয়ে যায়, এবং অসুস্থতার কারণে এখন আর সে আগের সেই নেক আমলটি করতে পারছে না, তখন তার জন্য ওই আমলের পুরো সাওয়াব লেখা হবে, যেমন সে সুস্থ অবস্থায় আমলটা করলে লেখা হতো।
একইভাবে অসুস্থতা ছাড়াও যদি তার আমলের ক্ষেত্রে অন্য কিছু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তাহলেও সে সওয়াব পাবে। যেমন, কোনো প্রয়োজনে কোথাও সফরে বের হলো অথবা মেয়েদের হায়েজ বা এ জাতীয় কোনো সমস্যা দেখা দিলো এবং এ কারণে সে আর আমলটি আগের মতো করতে পারলো না তাহলে তার জন্য তখনো পুরো সওয়াব লেখা হবে।
আরেক হাদিসে হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন মুসলিম বান্দার শরীরে কোন রোগ দিয়ে পরীক্ষা করেন, তখন তিনি ফেরেশতাকে বলেন, বান্দা যে নেক আমল নিয়মিত করত, তার সেই আমলের নেকি লিখতে থাক। এরপর আল্লাহ যদি তাকে আরোগ্য দান করেন, তাহলে তাকে গুনাহ থেকে ধুয়ে পবিত্র করে দেন। আর যদি তাকে মৃত্যু দান করেন, তাহলে তাকে মাফ করে দেন এবং তার প্রতি রহমত দান করেন’। (আহমাদ, হাদিস, ১৩৭১২, মিশকাত, হাদিস, ১৫৬০)
তিনি আরও বলেছেন, ‘বান্দা যখন সুন্দর পদ্ধতিতে ইবাদত-বন্দেগী করতে থাকে, এরপর অসুস্থ হয়ে পড়ে, তখন তার আমলনামা লেখার জন্য নিযুক্ত ফেরেশতাকে বলা হয়, এই বান্দা সুস্থ অবস্থায় যে আমল করত (অসুস্থ অবস্থাতেও) তার আমলনামায় তা লিখতে থাক। যতক্ষণ না আমি তাকে মুক্ত করে দেই অথবা তাকে আমার কাছে ডেকে আনি’। (আহমাদ, হাদিস, ৬৮৯৫, বায়হাকি, হাদিস, ৬৬২০; ছহীহুত তারগীব, হাদিস, ৩৪২১; মিশকাত, হাদিস, ১৫৫৯)