নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থী স্কুলে এলেও লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার শিমুলতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালা খুলেনি। এমনকি শিক্ষকরাও কেউ স্কুলে আসেনি। ফলে শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজে বিদ্যালয় এসে বাড়িতে ফিরে গেছেন।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর ) বেলা ১২ টায় গিয়ে শিমুলতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। এ ঘটনার পর থেকে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষকদের বিচার দাবি করেছেন।
এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা জানান, প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যেও সকাল সাড়ে ৯টায় কালীগঞ্জ শিমুলতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় যান তারা। এসময় একে একে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী এলেও শিক্ষক আসেনি। তালা বন্ধ থাকায় বিদ্যালয়ের বারান্দায় প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে তারা দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে এলাকাবাসীরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভুপতি মোহনকে ফোন দেন। পরে দেখতে পান প্রধান শিক্ষকের মোবাইলটি বন্ধ রাখা হয়েছে। এরপর শিক্ষার্থীরা পরিবারের লোকজনকে খবর দিলে তারাও প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোনে চেষ্টা করলে তারা ব্যর্থ হোন। এভাবেই টানা তিনঘন্টার বেশি শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুমে না ঢুকে কেউ ছাতা মাথায় কেউ বারান্ধায় অপেক্ষা করেন। পরে উপায় না পেয়ে প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে ভিজে বেলা ১২টায় তারা বাড়িতে ফিরে যান।
স্থানীয় কয়েকজন নাম না বলা শর্তে বলেন, প্রায় সময় প্রধান শিক্ষকসহ অনেকেই বিদ্যালয়ে আসেন না। ফলে প্রতি বছর এ বিদ্যায়ের শিক্ষার্থী কমতে শুরু করেছে। আমরা এ শিক্ষকদের বিচার চাই। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্য নষ্ট করার তাদের কোন অধিকার নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক জানান, প্রতিদিন এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক আসেন অনেক দেরিতে। ফলে শিক্ষার্থীরা বাড়ি থেকে দেরিতে আসতে চায়। আজ বৃষ্টির মধ্যেও শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসে। কিন্তু এসে দেখা যায় স্কুল তালা বন্ধ করে রেখেছে। এভাবে বিদ্যালয়ে কখনোই চলতে পারে না। যারা বিদ্যালয় দেখার দায়িত্বে আছেন তাদের অবশ্যই এটি আমলে নিতে হবে। না হলে শিক্ষার্থীদের জীবন একদিন নষ্ট হয়ে যাবে। শিক্ষার্থীরা আর কখনোই এই বিদ্যালয়ে আসতে চাইবে না।
শিমুলতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভুপতি মোহনের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রনোবির কুমার এ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আজ নির্ধারিত সময় পার হলেও বিদ্যালয়ে আসেনি। তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় জানান, খোজ খবর নিয়েছি, তারা কেন বিদ্যালয় আসেনি। এজন্য চিঠি পাঠিয়ে জবাব চাওয়া হবে। এছাড়াও আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।