এ ঘটনায় নিহত রামিমুল হাসানের চাচাসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে পুলিশ বলছে, আপন বড় ভাইয়ের ছেলেকে হত্যার পর থানায় গিয়ে জিডি করেছিলেন চাচা জুয়েল বেপারী।
ঘটনার ৫দিন পর রোববার (১ অক্টোবর) বিকেলের দিকে উপজেলা গোসিংগা ইউনিয়নের কর্ণপুর জঙ্গলের ভেতর থেকে ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে মোহনা টেলিভিশন অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম নাসিম।
এর আগে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর শ্রীপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের চন্নাপাড়া গ্রাম থেকে নিখোঁজ হয় বিজয়। সে শ্রীপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের চন্নাপাড়া গ্রামের রোমান বেপারীর ছেলে এবং স্থানীয় শতদল কিন্ডার গার্টেনে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো।
আটককৃতরা হলেন- নিহত রামিমুল হাসান বিজয়ের চাচা গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া চন্নাপাড়া গ্রামের মৃত নূর হোসেন বেপারীর ছেলে জুয়েল বেপারী (৩০), একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে জিহাদ (১৭) ও ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার ধলিয়া গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে শামীম (২৪)।
পুলিশ ও থানায় করা জিডির তথ্যমতে, ‘গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টার দিকে বাড়ির পাশ থেকে অজ্ঞাতনামা অপহরণকারীরা তুলে নিয়ে যায় বিজয়কে। খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজনসহ সবাইকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। এরপর সবার পরামর্শে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে বিজয়ের চাচা। অপহরণের একদিন পর ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা ১০ মিনিটে বিজয়ের বাবার মুঠোফোনে কল করে অপর প্রান্ত থেকে একটি পুরুষ কণ্ঠে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। কণ্ঠটি একটু বয়স্ক ব্যক্তির মনে হয়েছে। পরে জিডির পর বিজয়ের চাচা জুয়েল বেপারীকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ মরদেহের সন্ধান পেলে রোববার বিকেলের দিকে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহতের বাবা আহাজারি করতে করতে বলেন, ‘মুক্তিপণের ১০ লাখ টাকা নিয়ে নেত্রকোনা জেলার সুষম দুর্গাপুর নিয়ে যেতে বলে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফোন বন্ধ করে দেয় ওরা। এরপর থেকে কোনো যোগাযোগ করেনি। পুলিশ শুধু শুধু আশ্বাস দিয়েছে।”
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম মোহনা টেলিভিশন অনলাইনকে জানান, নিখোঁজের জিডি পাওয়ার পরপরই শ্রীপুর থানা পুলিশ বিজয়কে উদ্ধারে কাজ শুরু করে। পরিবারের জিডির সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে জিহাদকে চন্নাপাড়া এলাকা থেকে ও নেত্রকোনার নান্দাইল থানার ধলিয়াপাড়া গ্রাম থেকে শামীমকে আটক করা হয়।
তিনি আরও জানান, পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে শ্রীপুরের কেওয়া চন্নাপাড়া থেকে বিজয়ের চাচা জুয়েল বেপারীকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ মরদেহের সন্ধান পায়। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া তিনি বলেন, “এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এখন পর্যন্ত তিনজনকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আটককৃতদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য বের করতে কাজ করছে পুলিশ।”