নরসিংদীর সবজি দেশ-বিদেশে সুনাম থাকলেও কৃষকরা পাচ্ছে না ন্যায্যমূল্য। এখানকার কৃষকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সবজি উৎপাদন করে স্থানীয় বাজারে নিয়ে কম দামে বিক্রয় করতে হচ্ছে। এতে সবজির ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্জিত হচ্ছে তারা। অন্যদিকে ভোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। লাভবান হচ্ছে মধ্যসত্বভোগীরা।
নরসিংদী জেলায় এ বছর সবজি উৎপাদন ১৭ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিল। সেইটি ছড়িয়ে ১৭ হাজার ৩৯১ হেক্টর জমিতে সবজি উৎপাদন করা হয়েছে। উৎপাদিত সবজির পরিমান ৩ লক্ষ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ১০০ কোটি টাকার উপরে হবে।
নরসিংদীর সবজির খ্যাতি রয়েছে দেশজুডে। শিবপুর ,বেলাব, রায়পুরা উপজেলায় বেশী সবজির আবাদ করা হয়। এখানকার সবজি দেশের চাহিদার বড় একটা অংশ পূরণ করে। তবে অবাক করার মত হলেও সত্য স্থানীয় চাষিরা বঞ্জিত হচ্ছে নয্যামূল্য থেকে।
কৃষকরা মাঠ থেকে সবজি সংগ্রহ করে প্রথমে নিয়ে আসে স্থানীয় বাজারে। বর্তমানে কৃষকরা বাজারে পেপে ১৫ টাকা, চিচিংগা ২৪ টাকা, কাকরোল ২৫টাকা, বেগুন ৪৫ টাকা কেজি ধরে আড়তদারের কাছে বিক্রি করে। আড়তদাররা ঐ সকল সবজি ক্রয় করে স্থানীয় ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার খুচরা বাজারে সরবরাহ করে। এরপর কয়েক হাত ঘুড়ে খুচরা বাজারে আসতেই প্রতিটি সবজির দাম হয়ে যায় দ্বিগুনের চেয়ে বেশী। এমনকি ফসলের মাঠ থেকে কয়েক গজ দূরের বাজারে বাড়তি দামে বিভিন্ন সবজি কিনতে হয় ক্রেতাদের।
জেলার ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে জানিয়েছে বাজার নিয়ন্ত্রনে তাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। অন্যদিকে জেলার কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর কর্মকর্তা জানিয়েছে, কৃষকরা যদি সরাসরি ভোক্তার কাছে তাদের সবজি বিক্রি করতে পারত তবে কৃষক ও ভোক্তা উভয়ই লাভবান হত।
বাজারের এক সবজি বিক্রেতা বলেন, আমরা আমাদের সবজির ন্যয্যমূল্য পাচ্ছি না। আমরা যদি আমাদের সবজি সরাসরি ভোক্তার কাছে বিক্রি করতে পারতাম, তবে আমরা লাভবান হতাম।
স্থানীয় পাইকারি বিক্রেতা বলেন, আমরা স্থানীয় পাইকারি বাজার থেকে সবজি ক্রয় করে ঢাকা কাওরান বাজারে ৫ থেকে ১০ টাকা লাভে বিক্রি করে দেই।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর, নরসিংদীর সহকারি পরিচালক মাহামুদুর রহমান বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর, নরসিংদীর উপপরিচালক মোঃ অজিজুর রহমান বলেন, কৃষকরা যদি সরাসরি ভোক্তার কাছে তাদের সবজি বিক্রি করতে পারত তবে কৃষক ও ভোক্তা উভয় লাভবান হত।