বরগুনার পাথরঘাটায় অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা মাদ্রাসা ছাত্র হাসিবুল ইসলামের (১৪) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার (২২ অক্টোবর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের শিংড়াবুনিয়া এলাকার বিষখালী নদীর বেরিবাঁধের পাশ থেকে হাসিবুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তাকে অপহরণ করা হয়। পরে শনিবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী। এঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আবদুল্লাহ আল নোমান ওরফে তানভীর ওরফে শিশু ফকিরকে (১৯) আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
হাসিবুল ইসলাম পাথরঘাটার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথরঘাটা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে এবং পাথরঘাটা সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
ঘাতক নোমান জানান, হাসিবুল তার পূর্ব পরিচিত। শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসিবুলকে তার বাবার দোকানে বসেই কৌশলে কোল্ড ড্রিংসের সাথে অধিক পরিমাণে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে পূজায় ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে দোকান বন্ধ করে বের হই। পরে পাথরঘাটা পৌরসভার ঈমান আলী সড়কে সাবেক পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ডাঃ মিজানুর রহমানের ভাড়া বাসায় নিয়ে যাই। এরপর রাতে একত্রে ঘুমিয়ে পরি।
তিনি আরও বলেন, সকালে হাসিবুল স্বাভাবিক না হওয়ায় সেখানে বসে রশি দিয়ে হাত পা বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে মারধর করে পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করি। যাতে তারা সহজে মুক্তিপনের টাকা পরিশোধ করে সেজন্য অচেতন অবস্থায় হাসিবুলের গলায় ফাঁস দিয়ে নড়া চড়া করানোর চেষ্টা করি এবং এর ভিডিও ধারণ করে সেই ভিডিও তার চাচার কাছে পাঠিয়ে দেই। এর কিছুক্ষণ পর হাসিবুল মারা যায়। পরে সেখান লাশ রেখে শশুর বাড়ি গিয়ে দুপুরের খাবার খাই। পরে রোববার সকালে সেই বাসার গিয়ে ড্রামের ভেতর ঢুকিয়ে শশুর বাড়ি হোগলাপাশা এলাকায় নিয়ে একটি খড়ের গাদার পাশে রাখি। এরপর রোববার বিকেলে একটি অটোরিকশায় করে কাটাখালী এলাকায় সন্ধ্যায় ফেলে আসি।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শাহ আলম হাওলাদার জানান, নোমানসহ তার বাবা মহিউদ্দিন, শশুর ইউনুস, স্ত্রী তাহিরা, শাশুড়ি রাহিমা, আব্দুর রহমান, অটোরিকশা চালক আব্দুর রহমান, স্থানীয় জসিমসহ নয় জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নোমানের বিরুদ্ধে অপহরণ ও হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।