দেশে গত প্রায় দুই বছর ধরে চলছে ডলার সংকট। সে সংকট এখনও কাটেনি। বরং ডলার সংকটের কারণে দেশের অর্থনীতিতে নানা রকম জটিলতা আরও বাড়ছে। আমদানিকারকরা প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে এলসি খুলতে পারছেন না ডলারের অভাবে। কমে গেছে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি। এ কারণে দেশে নতুন বিনিয়োগ কমে গেছে, সেই সঙ্গে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কর্মসংস্থান। এই অবস্থার মধ্যেও ব্যাংকে ডলার বেশি না মিললেও খোলা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
জানা গেছে, এখনো অনেক ব্যাংকের বিদেশি আমদানি দায় মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দেশ থেকে অর্থ পাচার অব্যাহত থাকায় ডলারের প্রবাহ চাহিদামতো বাড়ছে না। রপ্তানিকারকেরাও পণ্য রপ্তানির আয় সময়মতো দেশে আনছেন না। আর ঋণপত্র খোলার জন্য প্রভাবশালী ও বড় ব্যবসায়ীদের যে চাহিদা রয়েছে, তাতে অন্যরা সুযোগই পাচ্ছেন না। ফলে সংকটও কাটছে না।
এসব নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বিভিন্নভাবে ডলারের উৎসগুলো সংকুচিত করে ফেলা হয়েছে। বিদেশি ব্যাংকগুলোও আগের মতো সমর্থন দিচ্ছে না। ডলারের কম দামের কারণে সব প্রবাসী আয় বৈধ পথে আসছে না। অর্থ পাচারও অব্যাহত রয়েছে। আবার ডলারের দামও পুরোপুরি বাজারভিত্তিক হচ্ছে না। অন্যান্য দেশ যেভাবে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার পরিচালনা করে, বাংলাদেশকেও সেই পথে যেতে হবে। কারণ, ডলার বাজারের পরিস্থিতি অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কিত। না হলে সংকট আরও দীর্ঘায়িত হবে, মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে।’
বর্তমানে ব্যাংকে ডলার না থাকলেও বাড়তি দামে সহজেই মিলছে খোলাবাজারে। অনেক ব্যাংকেই ডলারের জন্য হাহাকার। ডলার সংকটে এলসি নিষ্পত্তিও করতে পারছে না, অনেকের আবার নিষ্পত্তিতে দেরি হচ্ছে। এমন অবস্থায় খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১১৮ থেকে ১১৯ টাকায়।