খাটের নিচে মিলল নিখোঁজ শিশুর হাত-পা বাঁধা লাশ! প্রতিবেশী মা-মেয়ে আটক
আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
গাজীপুরের শ্রীপুরে নিখোঁজের ১দিন পর হাত-পা বাঁধা ও মুখে স্কচটেপ পেচানো অবস্থায় ইরিনা নামের এক শিশুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া গ্রামের সাহাবউদ্দিনের বাড়ি থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার হয় বলে জানান শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম। তবে, এ হত্যা কান্ডের রহস্য সম্পর্কে পরে বিস্তারিত জানাবেন বলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান তিনি।
নিহত ইরিনা (৬) উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি গ্রামের আসাদ মিয়ার মেয়ে। সে তার বাবার সঙ্গে শ্রীপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের চন্নাপাড়া গ্রামের রুবেল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতো। তার বাবা পেশায় একজন কসাই। আটক দুজন হলেন, সামিয়া আক্তার (১৫) ও তাঁর মা পেয়ারা বেগম (৪০)। তাদের বাড়ি সিরাজগঞ্জে। বর্তমানে তারা মাওনা চন্নপাড়া শাহাবুদ্দীনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
নিহত ইরিনার পরিবার জানায়, মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার দিকে বাসা থেকে বিয়ে বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ানোর কথা বলে প্রতিবেশী দুই মেয়ে ইরিনাকে নিয়ে যায়। এসময় তার গালায় স্বর্ণের চেইন, কানের দুল ছিলো। এদিকে ইরিনা দীর্ঘসময় বাড়ির বাহিরে থাকায় আশপাশে খুঁজে না পেয়ে থানায় জিডি করা হয়।
নিহত শিশুর বাবা আসাদ মিয়া বলেন, “মেয়েকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান না পেয়ে ওই রাতেই থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করি। অনেক রাতে পুলিশ তদন্তে যায়। পুলিশকে সন্দেহের তালিকায় থাকা দুজনের নাম বলি। পরে রাতে সন্দেহের তালিকায় থাকা ওই দুজনের বাড়ির একটি কক্ষে খাটের নিচ থেকে ইরিনার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ”। মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে তিনি আরও বলেন” জিডির পর থানা থেকে তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শনে যান এবং ঐ দুই বাচ্চার সাক্ষাৎকারও নেন। ঘটনাস্থলে পুলিশের ফোন পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর উপস্থিত হয়। তারপর আমি ঐ ঘরে তল্লাশি দিতে বললে, কাউন্সিলর বলেন তারা আমার পূর্ব পরিচিত। তাদের জিম্মা আমি নেবো। এই বলে আর তল্লাশি করতে দেয়নি। অথচ নিখোঁজ হওয়ার একদিন পরই পাওয়া গেলো আমার মেয়ের গালা কাটা লাশ। নিহতের বাবার দাবি গহনার জন্যই হত্যা করা হয়েছে তার মেয়েকে।
তবে, আটক সামিয়া আক্তার বলেন,“ওইদিন সন্ধ্যার আগে আমার কাছে আসে ইরিনা। সে বিয়েতে যাবে বলে আমাকে জানায় এবং এজন্য তাকে সাজিয়ে দেওয়ার জন্য আমাকে অনুরোধ করলে আমি তাকে সাজিয়ে দেই। পরে তাকে এগিয়ে দিতে বললে কিছু দূর দিয়ে আসি। এসময় একটি প্রাইভেটকারে আসলে রাসেল নামে একজন ইরিনার নাম ধরে ডাক দিলে ওই গাড়িতে উঠে যায় ইরিনা। এরপর আমি চলে আসছি। রাসেলকে আগেও কোথায় জানি দেখেছি দেখেছি মনে হয়। এ কথা আমি ইরিনার মা’কে সেদিনই বলেছি।”
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম মোহনা টেলিভিশনকে বলেন, “লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এরআগে,ওই শিশু নিখোঁজ হয়েছে মর্মে থানায় ডায়েরির পর উদ্ধারে অভিযান চালায় পুলিশ। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় নারী ও শিশু আইনে একটি মামলা হয়েছে।