সম্প্রতি খুলনার পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়নের প্রতাপকাটি গ্রামে সরকারি টাকায় একটি পারিবারিক কবরস্থান সংস্কার করে দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু। কবরস্থানটি মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতেনিহত মোসলেম আলী গাজীর বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সরকারি টাকায় কীভাবে রাজাকারের কবরস্থান সংস্কার করা হলো তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টিহয়েছে।
কপিলমুনি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সরদার বজলুর রহমান বলেন, মোসলেম গাজী মুক্তিযুদ্ধের সময় পিচকমিটি রসদস্য। রাজাকারদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতেন তিনি। এ কারণে মুক্তিযোদ্ধারা মোসলেমগাজীসহ আরও কয়েকজনকে তুলে নিয়ে লতা ইউনিয়নের শংকরদানা খেয়াঘাট এলাকায় গুলি করে মেরে ফেলেন। পরে পরিবারের সদস্যরা সেখান থেকে লাশটি নিয়ে এসে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন। ওই কবরস্থানটি সংস্কার করার জন্য সরকারি অর্থবরাদ্দ করেছেন সংসদ সদস্য।
গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় ‘ডাক্তারবাড়ি কবরস্থা ন’নামের ওই কবরস্থানটি সংস্কার করা হয়। কবরস্থান সংস্কারে বরাদ্দ দেওয়া হয় দুই লাখ টাকা। আর ওই বরাদ্দ দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মো.আক্তারুজ্জামান বাবু।
স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার কবরস্থান সংস্কারের কাজ শেষ হয়। এর পর সেখানে লাগানো হয় নামফলক। তখনই এলাকাবাসী বুঝতে পারেন সরকারি টাকায় ওই কবরস্থানের সংস্কার কাজ করা হয়েছে। ওই টাকা যে সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বরাদ্দ করেছেন তা নামফলকে স্পষ্টকরে উল্লেখ রয়েছে। গত শুক্রবার দুপুরে ওইকবরস্থানের উদ্বোধন করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাইকগাছা এলাকার মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার ছিলেন বিনয় সরকার। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা রাজাকার বা পিচ কমিটির সদস্য ছিলেন তাঁদের মুক্তিযোদ্ধারা খুঁজে খুজে মেরে ফেলতেন । তেমনই একজন ছিলেন মোসলেম গাজী। সেই রাজাকারের কবরস্থান যদি সরকারি অর্থে সংস্কার করা হয় তাহলে সেটি খবই দুঃখজনক। এটা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চরম অবমাননাকরও।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান জানান, নির্বাচনের আগে তাকে সমালোচনায় ফেলতে তার প্রতিপক্ষরা করেছে। এমন কোন বরাদ্দ তিনি দেননি।