অর্থনীতি

রাজধানীতে বড় মাছের কাঁটা-নাড়িভুঁড়ি বিক্রি হচ্ছে ‘চড়া’ দামে

মোহনা অনলাইন

কিছুদিন আগেও মাছের কাঁটা নাড়ি ভুঁড়ি ফেলে দেয়া হতো ময়লার ভাগাড়ে। কিংবা বাড়িতে যারা কুকুর-বিড়াল পোষেন এমন লোকজন সেগুলো চেয়ে নিতেন বিনামূল্যে। কিন্তু এখন সেই মাছের কাঁটার কেজি ১০০-১২০ টাকা ও মাছের নাড়ি ভুঁড়ি’র কেজি ১৮০-২০০ টাকা।

মূল্যস্ফীতির প্রভাবে বদলে গেছে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবিকার চিত্র। এখন বড় মাছের কাঁটা, নাড়িভুঁড়ি বিক্রি হচ্ছে রীতিমতো ‘চড়া’ দামে। ঢাকার কম আয়ের মানুষজন ১০০-১২০ টাকা কেজি দরে কিনছেন কাঁটা। মাছভেদে নাড়িভুঁড়ি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় ভাগায়। অথচ কিছুদিন আগেও ভালো মানের এক কেজি মাছ কেনা যেত এ দামে।

সোমবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ফকিরাপুল বাজারে দুদিন ঘুরে অন্তত ১০-১২ জন ক্রেতাকে মাছের কাঁটা কিনতে দেখা গেছে। ওই দুই বাজারেও প্রতি কেজি মাছের কাঁটা ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বাজারের বিক্রেতাদের প্রতিদিন কী পরিমাণ চাহিদা থাকে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন, আগে মাছের কাঁটা কেউ চাইলে তাকে কোনো টাকা ছাড়াই দিয়ে দেওয়া হতো কিন্তু এখন এগুলোর চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ বেশি খাচ্ছেন এসব মাছের কাঁটা।’ বিক্রিও হচ্ছে ভাল।
একই চিত্র দেখা গেছে রাজধানীর কারওয়ান বাজারেও। যারা বাড়তি দামে মাছ কিনতে পারছেন না, তারাই মূলত এর ক্রেতা। ক্রেতাদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে একজন ক্রেতা জানান, একার আয় দিয়ে বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে বাজার করার টাকা থাকে না। প্রায় দিনই খাবারের মেনু থাকে ডাল-ভর্তা। কিন্তু বেশ কয়েক মাস সেই আলুও আকাশছোঁয়া দামে বিক্রি হচ্ছে। যখন জানলাম, আলুর দামে মাছের কাঁটা কিনতে পাওয়া যায়। ডালের সঙ্গে বা কোনো সবজির সঙ্গে মাছের কাঁটা দিয়ে একটা পদ হয়ে যায়। সেটা অন্তত আলু ভর্তা থেকেও ভালো।
আরও একজন বলেন, আয় কমে যাওয়ায় চাল-ডাল কিনতেই তারা ফুতুর। তাই মাছ কিনতে না পেরে তারা কম দামে মাছের কাঁটা কিনছে। গত বছর ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ায় অন্যের ফেলে যাওয়া চামড়া বা গিলা-কলিজা বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে, যা এখন অনেক নিম্ন আয়ের মানুষের নিত্যকার খাবার তালিকায় থাকছে।
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button