কেরানীগঞ্জে বন্ধুকে আব্বা ডেকেও প্রাণে বাঁচতে পারল না রাসেল
আলমগীর হোসেন, কেরানীগঞ্জে ঢাকা
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বন্ধুকে আব্বা ডেকেও প্রাণে বাঁচতে পারল না রাসেল। তাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে তোলঘাট এলাকায় একটি ক্লাবে রাতভর নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এই ঘটনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফতাব উদ্দিন রাব্বিসহ ১৩জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নিহতের ছোট ভাই হৃদয় জানান, গত মঙ্গলবার রাতে তার বড় ভাই রাসেলকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আফতাব উদ্দিন রাব্বি তার বড় ভাই রাসেলকে বাসা থেকে মোবাইলফোনে ডেকে দোলঘাটে তার ক্লাবে নিয়ে যায়। সেখানে রাব্বি ও তার ১২জন সহযোগী মধ্যযুগীয় কায়দায় রাতভর পাশবিক নির্যাতন করে। এ সময় তার ভাই রাসেলকে আব্বা ডেকে প্রাণ ভিক্ষা চায় কিন্তু নির্যাতনকারীরা এতেও ক্ষান্ত না হয়ে তারা আবারও তার ভাইয়ের উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। পরে রাব্বিসহ তার সহযোগীরা তার ভাই রাসেলের লাশ একটি বস্তায় ভরে কালীগঞ্জে তার ভাইয়ের ফ্লাট বাসায় তার মা ও স্ত্রীর কাছে রেখে আসে। এ সময় ওই সন্ত্রাসীরা তার ভাবিকে এব্যাপারে মুখ না খোলার জন্য প্রাণনাশের হুমকিও দেয় । ভোররাতে ঘাতক রাব্বির বাবা দুবাইজ্জা শুভাড্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাসের উদ্দিন ও তার লোকজনের মাধ্যমে নিহত লাশ কালিগঞ্জ কবরস্থানে তড়িঘড়ি করে দাফনের চেষ্টা করে। এ সময় নিহতের পরিবার পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ দ্রুত এসে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন নিহত রাসেল সন্ত্রাসী রাব্বির ক্যাডার বাহিনীর একজন সদস্য ছিলেন। চাঁদাবাজির বাঘ বাটারা নিয়েই রাব্বি কে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়।
এই ঘটনায় রাসেলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হাওলাদার বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় সন্ত্রাসী রাব্বি কে প্রধান আসামি করে ১৩ জুনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নিহত রাসেলের বাড়ি বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভাসান চর গ্রামে। তার বাবার বর্তমানে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের খেজুর বাগ এলাকায় বসবাস করেন। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন এই ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।