দুই দফায় বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্বে ছিলেন শ্রীলঙ্কান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে তাকে কোচের পদ থেকে শুরুতে সাময়িক বরখাস্ত এবং পরে তার সাথে চুক্তি বাতিল করে বিসিবি। বহুদিন পর এক সাক্ষাৎকারে এবার রীতিমত বোমা ফাটিয়েছেন হাথুরু।
তার দাবি, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই তাকে বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এতে তার কোচিং ক্যারিয়ার কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে বলেই মনে করেন এই শ্রীলঙ্কান।
মূলত ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ চলাকালে এক ক্রিকেটারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ছিল হাথুরুর বিরুদ্ধে। যদিও তখনকার বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বরাবরই বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন।
হাথুরু দাবি করেন, তিনি নাসুমকে চড় মারেননি, বরং ব্যাটসম্যানদের গ্লাভস পাঠানোর জন্য পিঠে হালকা টোকা দিয়েছিলেন মাত্র। “আমি কোনো খেলোয়াড়কে আঘাত করিনি, এমনকি কখনও ঝগড়াও করিনি,” বলেন তিনি।
তার পক্ষে কথা বলেছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক সহকারী কোচ নিক পোথাস এবং স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ। দুজনেই অভিযোগটিকে ‘অতিরঞ্জিত ও ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখ করেছেন। হেরাথ বলেন, “বিশ্বকাপের সময় তার চারপাশে প্রচুর ক্যামেরা ছিল। কিছু ঘটলে প্রমাণ থাকত।” পোথাস যোগ করেন, “যারা অভিযোগ করেছেন, তাদের হয়তো ব্যক্তিগত ক্ষোভ ছিল। হাথুরু পেশাদার কোচ, এমন আচরণ করলে এতদিন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে টিকে থাকতে পারতেন না।”
হাথুরুসিংহের মতে, তাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত ছিল বিসিবির বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদের পূর্বপরিকল্পিত পদক্ষেপ। তার ভাষায়, “আমি জানি না, গত ছয় মাসে কতগুলো সুযোগ হাতছাড়া করেছি। বিসিবি শুধু আমার চুক্তি বাতিলের চেষ্টা করেনি, তারা আমার পুরো ক্যারিয়ারটাই ধ্বংস করেছে।”
হাথুরুসিংহে আরও জানান, বরখাস্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছেন। “আমার সঙ্গে সবসময় একজন ড্রাইভার ও একজন বন্দুকধারী থাকত। বরখাস্তের পর শুধু ড্রাইভার ছিল। তখনই বুঝেছিলাম, পরিস্থিতি ভালো নয়,” বলেন হাথুরুসিংহে।
টাকা তুলতে ব্যাংকে গেলে টিভিতে নিজের বরখাস্ত হওয়ার খবর দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। ব্যাংক ম্যানেজার পর্যন্ত তাকে সাবধান করে বলেন, রাস্তায় গেলে বিপদ হতে পারে। পরে এক বন্ধুর সহায়তায় টুপি ও হুডি পরে রাতের ফ্লাইটে দেশ ছাড়েন সাবেক এই কোচ।



