ভারতশাসিত কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জেরে পাকিস্তান জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (NSC) জরুরি বৈঠক ডেকেছে। মূলত ভারতের কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার জবাব দিতেই বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানান, সামরিক ও বেসামরিক শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণত বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা বা বহিরাগত হুমকির সময় এ ধরনের বৈঠক ডাকা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মিরের পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে একজন ছাড়া সবাই ভারতীয়, এবং বাকি একজন নেপালি নাগরিক। গত ২৫ বছরে কাশ্মিরে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ বেসামরিক হত্যাকাণ্ড।
ভারতের দাবি, হামলার পেছনে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের হাত রয়েছে। যদিও ‘কাশ্মির রেজিস্ট্যান্স’ নামে একটি অজ্ঞাত গোষ্ঠী হামলার দায় সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বীকার করেছে। তারা বলেছে, নিহতরা সাধারণ পর্যটক নয়, বরং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তবে এর স্বতন্ত্র কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
হামলার পর বুধবার ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এর মধ্যে রয়েছে পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত, সীমান্ত বন্ধ, পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং ভিসা বাতিল করে দুই দিনের মধ্যে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ।
পাকিস্তান এই হামলাকে ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ বলে উল্লেখ করেছে। তাদের দাবি, ভারত নিজেরাই হামলা সাজিয়ে পাকিস্তানের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, “এই সম্ভাবনা কখনোই পুরোপুরি অস্বীকার করা যায় না।” পাকিস্তান ভারতের কূটনৈতিক পদক্ষেপের ‘উপযুক্ত জবাব’ দেবে বলেও জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতশাসিত কাশ্মিরে ১৯৮৯ সাল থেকে বিদ্রোহ চলছে। বহু কাশ্মিরি মুসলিম এ আন্দোলনকে স্বাধীনতাকামী হিসেবে দেখেন, যেখানে ভারত দাবি করে, এটি পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ। দীর্ঘদিনের এই সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।


