গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরুর পর ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৩ হাজার ৫৫৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, সর্বশেষ আরও ৯ জন, যাদের মধ্যে ৩ শিশু রয়েছে, উপত্যকায় অনাহারে মারা গেছেন।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৮ জনের মৃতদেহ হাসপাতালগুলোতে আনা হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৪০৪ জন। এতে করে ইসরায়েলি আগ্রাসনে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৬৬০।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে কিংবা রাস্তায় পড়ে আছে। উদ্ধারকর্মীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছে না।’
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুধু মানবিক সহায়তা নেওয়ার সময় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে আরও ৪৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ২৩৯ জনের বেশি। এর ফলে ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৯৪ জনে। আহত হয়েছে ১৬ হাজার ৮৩৯ জনেরও বেশি।
গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে ও অপুষ্টিতে আরও ৯ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছে, যাদের মধ্যে ৩ শিশু রয়েছে। এতে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অনাহার সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৪৮। এর মধ্যে ১২৭ জন শিশু।
২ মার্চ থেকে গাজার সব সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। ফলে ২৪ লাখ মানুষের এই ভূখণ্ড ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়েছে।
জাতিসংঘ সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা মূল্যায়ন ইতিমধ্যেই উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত করেছে এবং আশঙ্কা করছে যে আগামী সেপ্টেম্বরের শেষে এর বিস্তার আরও দক্ষিণাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে।
১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলি সেনারা গাজায় ফের হামলা শুরু করেছে। তখন থেকে এ পর্যন্ত ১১ হাজার ৪২৬ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ৪৮ হাজার ৬১৯ জন। এতে ভেঙে গেছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি।
গত বছরের নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
একই সঙ্গে গাজায় যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চলছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে)।


