রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় টালমাটাল ফ্রান্সে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। প্রেসিডেন্টের সরকারি দপ্তর এলিসি প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বুধবার এ তথ্য রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন।
ওই কর্মকর্তা জানান, “বেশিরভাগ সংসদ সদস্য পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিপক্ষে। তাঁরা স্থিতিশীলতা চান। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন বাজেট গৃহীত হওয়ার কথা রয়েছে। তাই প্রথমেই পার্লামেন্টে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, “সব দিক বিবেচনা করেই প্রেসিডেন্ট নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।”
গত ৬ অক্টোবর পদত্যাগ করেন ফ্রান্সের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সেবাস্টিয়ান লেকোর্নো। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত এই রাজনীতিক আপাতত তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ পেলেই তিনি পদ ছাড়বেন।
ফ্রান্সে সম্প্রতি জাতীয় বাজেট কাটছাঁট নিয়ে বিরোধী দল ও জনগণের ক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ঋণের চাপ সামলাতে সরকার গত সেপ্টেম্বরেই কল্যাণমূলক ও জনস্বার্থ সম্পর্কিত খাত থেকে ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বরাদ্দ কমানোর প্রস্তাব পাস করে। এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে ফ্রান্সজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।
এই পরিস্থিতিতে পার্লামেন্টে ফাঙ্কোইস বায়রোর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলীয় এমপিরা। ভোটে পরাজিত হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন বায়রো। পরদিনই প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ সেবাস্টিয়ান লেকোর্নোকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।
তবে লেকোর্নো সরকারের সময়ও পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়নি। কট্টর বামপন্থি দল ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর অব্যাহত কর্মসূচির কারণে চাপ বাড়তে থাকে সরকারের ওপর। ফলে দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ২৭ দিন পরই এবং মন্ত্রিসভা গঠনের ১৪ ঘণ্টার মাথায় পদত্যাগ করেন লেকোর্নো।


