মেটা-মালিকানাধীন মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম ‘হোয়াটসঅ্যাপ’ তাদের ব্যবসায়িক নীতিমালায় বড় পরিবর্তন এনেছে। নতুন নীতি অনুযায়ী, প্ল্যাটফর্মটিতে এখন থেকে সাধারণ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত এআই চ্যাটবট ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ওপেনএআই, পারপ্লেক্সিটি ও লুসিয়ার মতো প্রতিষ্ঠানের হোয়াটসঅ্যাপভিত্তিক চ্যাটবটগুলোতে সরাসরি প্রভাব পড়বে।
মেটা এই পদক্ষেপের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গ্রাহকসেবার জন্য এআই ব্যবহার করছে, তাদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞার কোনো প্রভাব পড়বে না।
মেটা বলছে, হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস এপিআই তৈরি করা হয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহকসেবা দেওয়ার জন্য, চ্যাটবট পরিচালনার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নয়। মেটা জানিয়েছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তারা অপ্রত্যাশিতভাবে চ্যাটবট পরিচালনার জন্য এপিআই-এর ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করেছে। এর ফলে তাদের সিস্টেমে বার্তার পরিমাণ বেড়ে গেছে এবং অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর জন্য তারা প্রস্তুত ছিল না।
এই সিদ্ধান্তের ফলে ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি ও পারপ্লেক্সিটির মতো এআই অ্যাসিস্ট্যান্টগুলো হোয়াটসঅ্যাপের বিশাল ব্যবহারকারী গোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর একটি বড় সুযোগ হারাবে। গত বছর ওপেনএআই হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাটজিপিটি চালু করে। এতে ব্যবহারকারীদের বার্তা, ছবি ও ভয়েস নোট বিশ্লেষণ করে উত্তর দিতে পারত।
তবে এই পদক্ষেপের পেছনে একটি বড় ব্যবসায়িক কারণও রয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস এপিআই মেটার আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। তারা মার্কেটিং, ইউটিলিটি ও সাপোর্ট বার্তার জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে অর্থ নিয়ে থাকে। তবে সাধারণ চ্যাটবটের জন্য কোনো নির্দিষ্ট চার্জিং মডেল না থাকায় বিপুল পরিমাণ বার্তা আদান–প্রদান হলেও হোয়াটসঅ্যাপ এ থেকে আয় করতে পারছে না।
মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ সম্প্রতি এক আলোচনায় বলেন, ব্যবসায়িক বার্তা হবে তাদের কোম্পানির আয়ের পরবর্তী বড় ভিত্তি। এই নীতি পরিবর্তনের ফলে হোয়াটসঅ্যাপে একমাত্র সাধারণ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে মেটার নিজস্ব ‘মেটা এআই’ টিকে থাকবে। এটি মেটাকে প্রতিযোগিতায় একচেটিয়া সুবিধা দেবে।



