স্ত্রীকে কু-প্রস্তাব দেওয়ায় বন্ধুকে হত্যা
বরিশাল প্রতিনিধি
বরিশালে স্ত্রীকে কু-প্রস্তাব দেওয়ায় বন্ধুকে হত্যা, র্যাব-৮ এর অভিযানে স্বামীসহ গ্রেফতার ৩
স্ত্রীকে কু-প্রস্তাব দেওয়া বন্ধুকে অপহরণ করে হত্যার অভিযোগে ইউসুফ মোল্লা (২০) নামে এক যুবকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৮ এর সদস্যরা। সেইসঙ্গে নিহত ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৮ বরিশালের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান। তিনি জানান, নিহতের নাম শাহিন মোল্লা। তিনি বরিশাল নগরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রুপাতলী এলাকার মো. এমদাদুল হক মোল্লার ছেলে।
গ্রেফতার ইউসুফ মোল্লা বরগুনা জেলার আমতলী থানাধীন কালীপোড়া এলাকার রুহুল আমিন মোল্লার ছেলে। ইউসুফ ছাড়াও এ হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার বাকি দুজন হলেন, পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলার গন্ডামারি এলাকার রকিবুল ইসলামের ছেলে নাজমুল ইসলাম অমি (১৯) এবং বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সোনাহার গ্রামের মিজান শিকদারের ছেলে হামিম শিকদার (১৯)।
লিখিত বক্তব্যে গ্রেফতারদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে র্যাব-৮ বরিশালের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান বলেন, একই এলাকায় বসবাসের কারণে ব্যবসায়ী শাহিন মোল্লার সঙ্গে গ্রেফতার মো. ইউসুফ মোল্লার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কয়েকদিন আগে ইউসুফের সহধর্মিণী স্বর্ণা বিশ্বাসকে কু-প্রস্তাব দেন শাহিন মোল্লা। এতে শাহিনের ওপর ক্ষুব্ধ হন ইউসুফ এবং তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
এই র্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, ইউসুফের ভাড়া বাসায় ভিকটিম শাহিন মোল্লাকে ডেকে নেওয়ার পর আসামী ইউসুফ তার দুই সহযোগীর সহায়তায় শাহীনের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং তার মরদেহ বস্তাবন্দি করে বাথরুমের ফলস্ ছাদের ওপরে লুকিয়ে রাখে। কেউ যাতে না বুঝতে পারে সেজন্য ফলস্ ছাদের দরজা আঠা দিয়ে বন্ধ করে দেয় সে।
এদিকে শাহীন মোল্লা নিঁখোজ হওয়ার ঘটনায় তার স্বজন মো. আ. খালেক হাওলাদার ৩০ জানুয়ারি কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পাশাপাশি ৩১ জানুয়ারি শাহীন মোল্লার বোন শিরিন আক্তার মুন্নী র্যাবের কাছে একটি অভিযোগ করেন।
যার ধারবাহিকতায় র্যাব তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। এরইমধ্যে ২ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারকৃতরা ভিকটিমের পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ অবস্থায় তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রেফতারদের অবস্থান শনাক্ত করে র্যাব-৮ এর একটি বিশেষ টিম।
পরবর্তীতে র্যাব-৮ এর সহাকরী পরিচালক মো. রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে শনিবার রাত পৌনে ২ টার দিকে বরিশাল নগরের এয়ারপোর্ট থানাধীন পশ্চিম ইছাকাঠী, কাশিপুর ও বাকেরগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যার মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। পাশাপাশি মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশের সহযোগিতায় ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় র্যাব।
তিনি জানান, এ ঘটনার সঙ্গে গ্রেফতার তিনজন জড়িত ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে। বাকি কেউ জড়িত থাকলে অধিকতর তদন্তে বেরিয়ে আসবে।