জাতীয়

বিবিসির একান্ত সাক্ষাৎকারে নির্বাচন নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাম্প্রতিক যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিবিসির ইয়ালদা হাকিমের সঙ্গে একটি একান্ত সাক্ষাৎকারে নির্বাচন নিয়ে নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন।

এর জবাবে শেখ হাসিনা বলছেন, অবশ্যই না। নির্বাচন এবং ভোটাধিকারের জন্য আমি সারাজীবন ধরে সংগ্রাম করেছি, সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে। নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার জন্য আমরাই আইন করেছি। আমরা সবসময়েই চেয়েছি যেন মুক্ত ও স্বচ্ছ নির্বাচন হয়। এখন আমাদের ভোটার লিস্ট ছবিসহ তৈরি করেছি, আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বক্সের ব্যবস্থা করেছি।

সেই সময় ইয়ালদা হাকিম উল্লেখ করেন, গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৯৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে। ভোটের এই হার মিশরের মতো অনেক সামরিক শাসকের চেয়েও বেশি। এটা অনেকটা ভ্লাদিমির পুতিনের ভোটের মতো।

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, কেন নয়। আমাদের কাজের জন্যই মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছে। আমরা তাদের জন্য কাজ করেছি। আমাদের ১৭০ মিলিয়ন মানুষ রয়েছে। আমাদের জনগণ রাজনৈতিক অধিকারের ব্যাপারে সচেতন। আমরা ক্ষমতায় আসার পর দারিদ্র কমেছে, খাদ্য নিরাপত্তা বেড়েছে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গৃহায়ন সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। তাহলে মানুষ কেন (আমাদের) ভোট দেবে না?

বিবিসির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল যে জরিপ করেছে, সেখানে ৫০টা আসনের মধ্যে ৪৭টিতেই অনিয়ম দেখতে পেয়েছে। যার মধ্যে জাল ভোট, ভোটার ও বিরোধী এজেন্টদের বের করে দেওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে। এই কারণেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

‘তারা কী সেটা প্রমাণ করতে পেরেছে? কোথায় সেই প্রমাণ? আমি নথিপত্র দেখতে চাই। কারণ আমি বলছি, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো কেউ অভিযোগ করেনি। ২১-দলীয় জোট, বিএনপি-জামায়াত ইসলামী সব মিলিয়ে কতগুলো আসন পেয়েছিল? তিনশো আসনের মধ্যে মাত্র ২১টি। মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। তারা আমাদের জোটকে ভোট দিয়েছে,” শেখ হাসিনা বলেন।

তাহলে কেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছে যে, এটা অবাধ আর স্বচ্ছ হয়নি? ইয়ালদা হাকিম প্রশ্ন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেটা আমি জানি না, তারা কীভাবে এটা দেখেছে। কিন্তু নির্বাচন অবশ্যই স্বচ্ছ এবং অবাধ হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা (বিএনপি জোট) শুরুতে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি কী হলো? আমাদের ৩০০ আসন আছে। আপনাকে তিনশো প্রার্থী দিতে হবে। তারা মনোনয়ন দিয়েছে প্রায় ৭০০ জনকে। তারা নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে শুরু করে। একপর্যায়ে তারা নির্বাচন থেকে সরে যায়। তাহলে তারা কীভাবে দাবি করতে পারে যে, নির্বাচন স্বচ্ছ, অবাধ হয়নি।

সেই সময় ইয়ালদা হাকিম মনে করিয়ে দেন, এটা বিরোধীদের কথা নয়, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এই তথ্য দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এটা বলেছে, আমার তাদের স্বচ্ছতা নিয়েই আমার সন্দেহ রয়েছে। আমি খোলাখুলি ভাবেই বলছি।’

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button