৪২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি শাহজাহান ভূইয়া ওরফে জল্লাদ শাহজাহান দীর্ঘ ৩১ বছর ৬ মাস ২ দিন কারাভোগ শেষে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
অস্ত্র, ডাকাতি ও হত্যা মামলায় আলোচিত এই জল্লাদ রবিবার (১৮ জুন) বেলা ১১:৪৫ মিনিটে রেয়াত নিয়মে সাজা ভোগ শেষে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেড়িয়ে আসেন।
তেহাত্তর বছর বয়সী শাজাহান ভূইয়া নরসিংদী জেলার পলাশ থানার ইছাখালী গ্রামের মৃত হাছেন আলীর ছেলে। আদালত আসামি শাহজাহান কে অস্ত্র মামলায় ১২ বছর, হত্যা ও ডাকাতি মামলায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারা দণ্ড ও ৫০০০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান সহ মোট ৪২ বছর কারা দণ্ড প্রদান করে। বিশেষ রেয়াত অনুযায়ী উক্ত আসামির ১০ বছর ৫ মাস ২৮ দিন সাজা মওকুফ হয়।
কারাগারের তথ্য অনুযায়ী ২০০১ সাল হতে এপর্যন্ত তিনি ২৬ জনের ফাঁসি দিয়েছেন, যার মধ্যে ৬ জন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যু দণ্ড প্রাপ্ত আসামি, ৪ জন যুদ্ধাপরাধী, ২ জন জেএমবি ও ১৪ জন অন্যান্য আলোচিত মামলার আসামী রয়েছে।
জেল থেকে বেড়িয়ে শাহজাহান বলেন, আমি মনে করবো আজ আবার নতুন করে ভূমিষ্ঠ হলাম। আমি পেছনের সব ভুলে নতুন করে শুরু করতে চাই। আর আমি যে-সব লোকদের ফাঁসি কার্যকর করেছি এগুলো আমার কোন অবদান নয় আমি সরকারের আদেশ পালন করেছি মাত্র। নতুন করে বেঁচে থাকতে তিনি সরকারসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
কারা পরিদর্শক সুভাষ কুমার বলছেন, প্রবিধান অনুসারে শাহজাহানের ১০ বছরের কিছু বেশি সময় সাজা কমানো হয়েছে। কারাগারে থাকাকালীন সে সবার সাথে ভালো ব্যবহার করতো। শাহজাহান দীর্ঘদিন কারাগারে থাকাকালীন কেউ তার সাথে দেখা করতে আসেনি তবুও সে কারাগার থেকে বেড়িয়ে বাব দাদার ভিটাতেই যেতে চান। সে কারামুক্তির খবরে খুশি হলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।
তিনি আরও বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ শাহজাহানকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে, যাতে তিনি পরবর্তী জীবনে ভালোভাবে চলতে পারেন।
উল্লেখ যে, শাহজাহান গত ১৭ ডিসেম্বর ১৯৯১ তারিখে অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রথম মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে এবং ২১ নভেম্বর ১৯৯৫ তারিখ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আসেন বলে জানা যায়। তার পারিবারিক আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকার জন্য তার আবেদনের প্রেক্ষিতে তার জরিমানার ৫০০০+৫০০০= ১০,০০০/- টাকা কারাগার কর্তৃপক্ষ পরিশোধ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত। কারাগারে থাকাকালীন তার পিতাও মারা যান।