সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও উসকানি দেওয়ার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো নিয়ন্ত্রণে সরকারের জিরো টলারেন্স রয়েছে। তবুও এ অপচেষ্টা যে থেমে নেই।
মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান নামের একজনের খোঁজ পাওয়া গেছে, যিনি পরিচিতদের কাছে জঙ্গি হাফিজ নামে পরিচিত। তিনি বেশ কয়েকদিন ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে লাগাতার মিথ্যা তথ্য, অশ্লীল ও কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া রাষ্ট্রবিরোধী এবং ধর্মীয় উসকানিমূলক পোস্টও দেখা গেছে।
‘শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের লুটপাট ফাঁস, মায়ের সহযোগিতায় ছেলের দুর্নীতি, জোচ্চুরি, কমিশন বাণিজ্য, ব্যাংক ডাকাত’- এমন অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ, মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক শিরোনামে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি ব্যবহার করে বানানো ভিডিও শেয়ার করে অপপ্রচার করছেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশের মানুষের আবেগের জায়গা ধানমণ্ডি-৩২ নম্বর বাড়ি নিয়েও অপপ্রচার ও জঘন্য কুৎসা রটানোর ভিডিও শেয়ার দিয়ে ছড়িয়েছে এই হাফিজ, যে ভিডিওতে বলা হয়েছে ‘ধানমণ্ডি-৩২ নম্বর বাড়ি শেখ মুজিবুর রহমান ঘুস হিসাবে নিয়েছিলেন’।
গণভবন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার মতো সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডের ঘোষণার একটি ভিডিও পোস্টও তার ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার দিয়ে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে সমর্থন ও অংশগ্রহণের অপপ্রচার করেছে।
এই জঙ্গি হাফিজ বাংলাদেশের পুলিশের বিরুদ্ধেও অশালীন মন্তব্যের পোস্ট শেয়ার দিয়ে ছড়াচ্ছেন। পুলিশ ও সরকারকে জড়িয়ে বানোয়াট, মিথ্যা অপপ্রচারের একটি ভিডিও পোস্টও তিনি শেয়ার দিয়ে ছড়াচ্ছেন। অপপ্রচারে বাদ যায়নি ছাত্রলীগের নামও। তার ফেসবুক ওয়ালে রয়েছে এ সংক্রান্ত পোস্টও।
প্রশ্ন উঠেছে, ফেসবুকে লাগাতার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে মিথ্যা, অশ্লীল-কুৎসা রটানো এবং পুলিশের নামে গুজব, ধর্মীয় উসকানিমূলক ও রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারে জড়িত থাকা ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা এড়িয়ে কীভাবে এভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, জাতির জনকের পরিবারের নামে এভাবে উদ্দেশ্য নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার ও অশ্লীল-কুৎসা রটানো অপরাধী কীভাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
সূত্রে জানা যায়, হাফিজুর রহমানের বাড়ি খুলনার পাইকগাছার গড়ইখালিতে। বয়স আনুমানিক ৪০। তার বাবার নাম আবদুল গনি সরদার। হাফিজ ঢাকায় কুলি বা লেবার পেশার ছদ্মবেশে থাকে। মালপত্র পরিবহনের আড়ালে সে বাসাবাড়ি-অফিসসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় যায়।
গুজব, রাষ্ট্রবিরোধী, জঙ্গিবাদ, ধর্মীয় উসকানিমূলক ও আপত্তিকর কনটেন্ট বা পোস্ট দিয়ে দেশে প্রায়শই একের পর এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হয়েছে। ভোলার বোরহানউদ্দিনে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়, রংপুরে কিংবা রামু- এসব ঘটনার পেছনে রয়েছে ফেসবুকে ছড়ানো গুজব। সেক্ষেত্রে এই চক্র দীর্ঘ সময় ধরে অন্য কোনও বড় নাশকতামূলক পরিকল্পনা করছে কিনা, সেটিও আশঙ্কার বিষয়।