গত শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের ফিউচার হাউজিং ও ওয়াকওয়েতে একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৯ যুবককে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-লেগুনা চালক মোঃ আকাশ, ফুটপাতে গেঞ্জি বিক্রেতা মোঃ নয়ন, ডানো কোম্পানীর ভ্যান গাড়ির ড্রাইভার মোঃ সজল ইসলাম, প্রত্যয় বাসের হেলপার মোঃ আবু কালাম, অটোরিক্সা চালক মোঃ আরিফ, আজিম গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর কর্মী মোঃ সজীব, বাসের রং মিস্ত্রী মোঃ কবির, রাজমিস্ত্রী মোঃ নাসির ও লেগুনা চালক মোঃ সুজন।
মোহাম্মদপুর থানা সূত্রে জানানো হয়, মোঃ সুফিয়ান ইবনে সেলিমসহ কয়েকজন থানায় এসে অভিযোগ করেন, শুক্রবার সন্ধ্যা অনুমান ০৭:০০ টায় বাসা থেকে তিন রাস্তার মোড়ে আসার পথে ফিউচার হাউজিং মসজিদের সামনে রাস্তার উপর পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন যুবক হাতে লাঠি, ধারালো বড় ছোরা ও চাপাতি নিয়ে তাকে ঘিরে ধরে। তারা তাকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। তারা তুরাগ নদীর তীরবর্তী ওয়াকওয়ের দিকে হেটে যায়। তিনি তাদের পিছু নেন। ওয়াকওয়েতে স্মার্ট বেম্বো রেস্টুরেন্টের সামনে সঙ্গীয় ফাহিম ইমরানকে মারধর করে তার নিকট থেকে একটি আইফোন ছিনিয়ে নেয়। কিছু দূর এগিয়ে ওয়াকওয়েতে হান্ড্রেড মাইল রেস্টুরেন্টের সামনে নুসরাত আফ্রিন ও তার বন্ধু রুহুল আমিনকে মারধর করে একটি মোবাইল ফোন ও ১২০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। তারা একই পথ ধরে বসিলা ৪০ ফিট যাওয়ার পথে আরো কয়েকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। এরূপ অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়।
থানা সূত্রে আরও জানানো হয়, ওয়াকওয়েতে একাধিক ছিনতাই সংঘটিত হওয়ার সংবাদ পাওয়া মাত্রই মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন, আসামীদের গ্রেপ্তার এবং লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে। অল্প সময়ের মধ্যে কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা সংঘটিত হওয়ায় বিষয়টি ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রচারিত হয়। বসিলা ৪০ ফিট রাস্তা, ফিউচার হাউজিং, রাজধানী হাউজিং, বসিলা গার্ডেন সিটি, গ্রীন সিটি ও ঢাকা উদ্যান এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে স্থাপিত সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তায় ও সোর্সের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাদের প্রতিপক্ষ একজনকে মারার জন্য তারা ঢাকা উদ্যানের দিকে যাচ্ছিল। যাওয়ার পথে তাদের কয়েকজন ওয়াকওয়েতে থাকা পথচারীদের মারধর ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে তাদের নিকট থাকা মোবাইল, নগদ টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় এবং ফেরার পথে কয়েকটি দোকানে ভাংচুর চালায়। গ্রেপ্তারকৃতদের হেফাজত থেকে ঘটনায় লুণ্ঠিত ১টি মোবাইল ফোন ও অপরাধে ব্যবহৃত ৩টি চাপাতি ও ২টি ছোরা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষন করে ঘটনায় জড়িত অন্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।