স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের কাছে থানকুনি পাতার গুরুত্ব সর্বদাই বেশি। বিশেষ করে বাড়ির বয়োজ্যষ্ঠরা এই পাতার খুব গুরুত্ব দিতেন। শরীর সুস্থ রাখতে এই পাতার জুড়ি নেই। নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে এর উপকার বলে শেষ করা যাবে না।
১৭ শতক থেকেই আফ্রিকা, জাভা, সুমাত্রাতেও ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় এই পাতা। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও এই পাতা বাটা খুবই উপকারী। দেখে নিন থানকুনি পাতার উপকারিতা।
১. ঠান্ডা কাশি কমাতে
থানকুনি পাতার রস খুবই উপকার। তবে মধুর সঙ্গে থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে খেলে কাশি এবং শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য অসুখ সারাতে সাহায্য করে। তুলসি ও গোল মরিচ দিয়ে থানকুনি পাতা খেলে তা ঠান্ডা এবং জ্বরও নিরাময় করে। গলা ব্যথা এবং কাশি নিরাময়ের জন্য, থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে সামান্য চিনি মিশিয়ে পান করুন।
২. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য থানকুনি পাতা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
৩. ক্ষত নিরাময়ে
কোনও ভাবে চোট পেলে কিংবা কেটে গেলে দ্রুত রক্তপাত বন্ধ করতে থানকুনি পাতার কোনও জুড়ি নেই। থানকুনি পাতা বেটে কাটা জায়গায় লাগালে ব্যথা কম হবে আর রক্ত পড়াও বন্ধ হয়ে যাবে।
৪. রক্ত প্রবাহ ঠিক থাকে
অনেকের থ্রম্বোসিসের সমস্যা থাকে। এছাড়াও অনেকের দেহেই অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণে রক্তপ্রবাহে সমস্যা হয়। থানকুনি পাতার রস খেলে রক্ত শুদ্ধ থাকে। ফলে শরীরের প্রতি কোশে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে যায়। ফলে অনেক সমস্যার উপশম হয়। হাত ফুলে যাওয়া, পা ফুলে যাওয়া এসব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৫. রক্ত জমাট
থানকুনি পাতার মধ্যে থাকে নানা রকম খনিজ উপাদান, যা তাড়াতাড়ি রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। যে কারণে অনেক জটিল রোগ থেকে খুব দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।
৬. আমাশয় ও আলসার নিরাময়
আমাশয় থেকে আলসার সেরে যায় এই পাতার গুণেই। আর নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। ক্রনিক আমাশয়ের ক্ষেত্রে খুবই ভালো থানকুনি পাতা।
৭. মানসিক অবসাদ
মানসিক সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য খুব ভালো থানকুনি পাতার রস। থানকুনি স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে মানসিক চাপ আর অস্থিরতা দুই কমে। এর ফলে অ্যাংজাইটির আশঙ্কাও কমে যায়।
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও নিয়মিত থানকুনি পাতা খাওয়া শুরু করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পেন্টাসাক্লিক ট্রিটারপেনস নামের একটি উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যে কারণে ব্রেনসেল ভালোভাবে কাজ করতে পারে। স্মৃতিশক্তির উন্নতি তো ঘটেই, সেই সঙ্গে বুদ্ধির ধারও বাড়ে চোখে পড়ার মতো। এই কারণেই তো ছোট বাচ্চাদের থানকুনি পাতার রস খাওয়ানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।