খেলাধুলা

ইংল্যান্ডের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা বাঁচিয়ে রাখলো স্টোকসের সেঞ্চুরি

মোহনা অনলাইন

গতকাল (০৮ নভেম্বর) ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের অষ্টম ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ১৬০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডসকে। রান বিবেচনায় বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের পক্ষে তৃতীয় সর্বোচ্চ ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। এভাবেই বেন স্টোকসের সেঞ্চুরিতে ২০২৫ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখলো ইংল্যান্ড।

এই জয়ে ৮ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে টেবিলের তলানি থেকে সপ্তমস্থানে উঠলো ইংল্যান্ড। সমানসংখ্যক ম্যাচে ৪ করে পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম থেকে দশম পর্যন্ত আছে যথাক্রমে- বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও নেদারল্যান্ডস। টেবিলের এই শেষ চার দল ইংল্যান্ড-বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ও নেদারল্যান্ডস, আগামী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার জন্য বাকী দু’টির স্থানের জন্য লড়াই করছে।
নেদারল্যন্ডসের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩৩৯ রান করে ইংল্যান্ড। বিশ^কাপে প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া ইনিংসে ৮৪ বলে ১০৮ রান করেন স্টোকস। জবাবে ৩৭ দশমিক ২ ওভারে ১৭৯ রানে গুটিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। এই হারে সেমির স্বপ্ন ভঙ্গ হলো ডাচদের।
পুনেতে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্বান্ত নেয় ইংল্যান্ড। ৭ ওভারে ইংলিশদের ৪৮ রান এনে দেন দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড মালান। প্রথম ব্যাটার হিসেবে প্যাভিলিয়নে ফিরেন ২টি চারে ১৫ রান করা বেয়ারস্টো।
বেয়ারস্টোর সাথে না হলেও তিন নম্বরে নামা জো রুটের সাথে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি গড়েন মালান। দু’জনে মিলে ৮০ বল মোকাবেলা করে দলকে ৮৫ রান এনে দেন। জুটিতে ৩৫ বলে ২৮ রান অবদান রেখে ফিরেন রুট।
রুট ফেরার পরই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ৩৬ বলে ওয়ানডেতে সপ্তম হাফ-সেঞ্চুরি করা মালান। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত ৭৪ বলে ১০টি চার ও ২টি ছক্কায় ৮৭ রানে আউট হন মালান।
দলীয় ১৩৯ রানের মধ্যে রুট-মালান ফেরার পর চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। মিডল অর্ডারে তিন ব্যাটার দ্রুত প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। হ্যারি ব্রুক ১১, অধিনায়ক জশ বাটলার ৫ ও মঈন আলি ৪ রানে আউট হন।
১৯২ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেন বেন স্টোকস ও ক্রিস ওকস। ৪১ রানে জীবন পেয়ে ছক্কার সহায়হায় ৫৮ বলে ওয়ানডেতে ২৪তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন স্টোকস।
হাফ-সেঞ্চুরির পর মারমুখী ব্যাট করেছেন স্টোকস। হাফ-সেঞ্চুরি থেকে সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে ২০ বল খেলেছেন তিনি। ৪৮তম ওভারের পঞ্চম বলে পেস বোলিংয়ে রিভার্স সুইপে চার মেরে ৭৮ বলে বিশ^কাপে নিজের প্রথম ও ওয়ানডেতে পঞ্চম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন স্টোকস।
শেষ ওভারে নেদারল্যান্ডস পেসার লোগান ভ্যান বিকের বলে আউট হন ৬টি করে চার-ছক্কায় ৮৪ বলে ১০৮ রান করা এ তারকা ব্যাটার। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৫ বলে ৫১ রান করেন ওয়ানডেতে ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি পাওয়া ওকস। সপ্তম উইকেটে ৮১ বলে ১২৯ রান যোগ করেন স্টোকস-ওকস। এতে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩৩৯ রানের বড় সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড। শেষ ১০ ওভারে ১২৪ রান তুলে এবারের আসরে দ্বিতীয়বার ৩শ রানের কোটা পার করতে সক্ষম হয় ইংলিশরা। ওয়ানডেতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় রান ইংল্যান্ডের। বল হাতে নেদারল্যান্ডসের বাস ডি লিডে ৭৪ রানে ৩ উইকেট নেন।
৩৪০ রানের বড় টার্গেটে শুরুটা ভালো হয়নি নেদারল্যান্ডসের। ১৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে ডাচরা। এরপর দুই হাফ-সেঞ্চুরির জুটিতে লড়াই করার চেষ্টা করে তারা। তৃতীয় উইকেটে ওয়েসলি বারেসি ও সিব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট ৭০ বলে ৫৪ রান যোগ করেন।
এরপর ষষ্ঠ উইকেটে ৫০ বলে ৫৯ রান তুলেন অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস ও তেজা নিদামানুরু। কিন্তু কোন ব্যাটারই হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পাননি। বারেসি ৩৭, এঙ্গেলব্রেখট ৩৩ ও এডওয়ার্ডস ৩৮ রান করেন। ৩৭ দশমিক ২ ওভারে ১৭৯ রানে নেদারল্যান্ডস গুটিয়ে গেলেও, সর্বোচ্চ ৪১ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন নিদামানুরু। ৩৪ থেকে ৩৮, এই পাঁচ ওভারে ১৬ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় ডাচরা।
ইংল্যান্ডের দুই স্পিনার রশিদ খান ও মঈন সমান ৩টি করে উইকেট নেন। দুই পেসার ডেভিড উইলি ২টি ও ওকস ১টি উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড : ৩৩৯/৯, ৫০ ওভার (স্টোকস ১০৮, মালান ৮৭, লিডে ৩/৭৪)।
নেদারল্যান্ডস : ১৭৯/১০, ৩৭.২ ওভার (নিদামানুরু ৪১*, এডওয়ার্ডস ৩৮, মঈন ৩/৪২)।
ফল : ইংল্যান্ড ১৬০ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: বেন স্টোকস(ইংল্যান্ড)।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button