স্বাস্থ্য

হাঁটুর জয়েন্টে ব্যথা কেন হয়, জানুন সমাধান

মোহনা অনলাইন

হাঁটু মানুষের শরীরের সমস্ত ওজন বহন করে এবং আমাদের দাঁড়াতে, হাঁটতে, দৌড়াতে সাহায্য করে। হাঁটু মূলত একটি জটিল অস্থিসন্ধি, যা ফিমার, প্যাটেলা এবং টিবিয়া নামক ৩টি হাঁড়ের সমন্বয়ে গঠিত। এছাড়াও এই জয়েন্ট অনেক মাংশপেশি ও সন্ধিবন্ধনীর সাহায্যে সংযুক্ত।

বিভিন্ন কারণে হাঁটু ব্যথা হতে পারে। তবে অন্যতম কারণ—হাড়ক্ষয় বাত বা অস্টিওআথ্রাইটিস। এর ফলে হাঁটুতে ব্যথা হয়, কখনো কখনো হাঁটু ফুলে যেতে পারে। হাঁটাচলা করতে, নামাজ পড়তে, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে অনেক কষ্ট হয়।
আঘাত হাঁটুর ব্যথার একটি বড় কারণ। আঘাতের কারণে মাংশপেশি বা লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায়। কখনো কখনো হাঁড় সরে বা ভেঙে যায়। অনেক সময় ভারী জিনিস ওঠানামা করার কারণেও হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত ওজনের কারণেও হাঁটু ব্যথা হতে পারে।হাঁটু মানুষের শরীরের সমস্ত ওজন বহন করে এবং আমাদের দাঁড়াতে, হাঁটতে, দৌড়াতে সাহায্য করে। হাঁটু মূলত একটি জটিল অস্থিসন্ধি, যা ফিমার, প্যাটেলা এবং টিবিয়া নামক ৩টি হাঁড়ের সমন্বয়ে গঠিত। এছাড়াও এই জয়েন্ট অনেক মাংশপেশি ও সন্ধিবন্ধনীর সাহায্যে সংযুক্ত। ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপনার ব্যথা কিছুটা হলেও উপশম হবে। জেনে নিন সেসব পদ্ধতিগুলো-

১. হাঁটু যেহেতু আমাদের শরীরের সমস্ত ওজন বহন করে তাই হাঁটুর ওপর চাপ কমাতে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।

২. প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটতে হবে। এছাড়াও কিছু আরোবিক ব্যায়াম যেমন—দৌঁড়ানো, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানোর অভ্যাস হাঁটু ভালো রাখবে।

৩. আমাদের হাঁড় গঠনে ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের ভূমিকা অনেক। শরীরে এই ভিটামিন ডি সংশ্লেষণে সূর্যের আলোর ভূমিকা অপরিসীম। তাই সুস্থ সবল হাঁড় গঠনে আমাদের কমপক্ষে ২০-৩০ মিনিট সরাসরি সূর্যের আলোর সংস্পর্শে থাকা উচিত।
গবেষণা বলছে, মধ্য দুপুরের সূর্য অর্থাৎ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সময়ের সূর্যের আলো ভিটামিন ডি সংশ্লেষণে সাহায্য করে।

৪. কিছু সহজ ব্যায়াম হাঁটুকে শক্তিশালী করে এবং ব্যথামুক্ত রাখতে সাহায্য করে

ক. একটি নরম তোয়ালে ভাঁজ করে হাঁটুর নিচে রেখে হাঁটু দিয়ে তোয়ালের উপর চাপ দিয়ে ৫-১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এভাবে ১০ বার করে দিনে ২-৩ বার করতে হবে।

খ. একটি চেয়ারে বসে পায়ের গোড়ালিতে ১-২ কেজি ওজন বেঁধে পা সোজা করে ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং পরে ভাঁজ করুন। আবার সোজা করুন। এভাবে ১০-১৫ বার করে দিনে ২-৩ বার করতে হবে।

৫. ফিজিওথেরাপি : হাঁটু ব্যথার চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি খুবই কার্যকর চিকিৎসা ব্যবস্থা। শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি হাঁটু ব্যথা নিরাময়ে খুবই কার্যকরী। বিভিন্ন ধরনের ম্যানুয়াল থেরাপি, যেমন—জয়েন্ট মবিলাইজেশন, ম্যানিপুলেশন, স্ট্রেচিং, টেপিং ইত্যাদি খুবই কার্যকরী। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের হিট কম্প্রেশন হাঁটু ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করে।

৬. খাদ্যাভাস : একটি পরিমিত পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস হাঁটুর ক্ষয়রোধ করতে সাহায্য করে। প্রচুর পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেমন—ভিটামিন এ, সি, ই জয়েন্টের ক্ষয়রোধ করে।
ছোট মাছ, ডিম, দুধ, মাখন, দই, পনির ইত্যাদি ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার হাঁড়ের শক্তি বৃদ্ধি করে।

তেলসমৃদ্ধ মাছে আছে স্বাস্থ্যকর ওমেগা-৩ যা এন্টি ইনফ্লামেটরি সমৃদ্ধ এবং হাঁড়ক্ষয় রোধে খুবই উপকারী। এছাড়া কিছু তেল যেমন—অলিভ অয়েল, এভোকোডা, সেফ-ফ্লাওয়ার তেল শরীরের কোলেস্টোরল কমাতে সাহায্য করে। পালংশাক, রসুন, বাদাম, ব্রকলি, গ্রিন-টি ইত্যাদি খাবার হাঁড়ের ক্ষয় রোধে খুবই উপকারী।

হাঁটু সুস্থ রাখতে, ব্যথামুক্ত জীবনযাপন করতে নিয়মিত ব্যয়াম করুন, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন এবং সুস্থ থাকুন।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button