বল হাতে মিলিত প্রচেষ্টায় লক্ষ্যটা নাগালে রাখলেন কাইল মেয়ার্স, মোহাম্মাদ সাইফুদ্দিন, ওবেড মেককয়রা। পরে ব্যাট হাতেও ঝড় তুললেন মেয়ার্স। তামিম ইকবাল খেললেন অধিনায়কচিত অপরাজিত ফিফটি ইনিংস। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে উড়িয়ে কোয়ালিফায়ারের টিকেট পেয়ে গেল ফরচুন বরিশাল।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সোমবার ৭ উইকেটে জিতেছে বরিশাল। ১৩৬ রানের লক্ষ্য ৩১ বল হাতে রেখে তামিম ইকবালের দল। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আগামী বুধবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে হেরে যাওয়া দলের মুখোমুখি হবে তারা।
বল হাতে ২৮ রানে ২ উইকেট নেওয়ার পর ২৬ বলে ৫০ রানের ইনিংস উপহার দেওয়া মেয়ার্স ম্যাচের নায়ক। তামিম অপরাজিত থাকেন ৪৩ বলে ৫২ রানে।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এলিমিনেটর ম্যাচে বরিশালের বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা তানজিদ তামিমকে ২ রানে বিদায় দেন বরিশালের পেসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
সতীর্থকে হারালেও চট্টগ্রামের রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন ওপেনার ব্রাউন। পঞ্চম ওভারে আবারও ধাক্কা খায় চট্টগ্রাম। ৭ রান করে বরিশালের পেসার ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওবেড ম্যাককয়ের বলে আউট হন তিন নম্বরে নামা ইমরানউজ্জামান।
৩১ রানে ২ উইকেট হারালেও, ব্রাউনের ব্যাটে চট্টগ্রামের দলীয় রান ৫০ স্পর্শ করে। কিন্তু সপ্তম ওভারের শেষ বলে ম্যাককয়ের দ্বিতীয় শিকার হন ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২২ বলে ৩৪ রান করা ব্রাউন।
দলীয় ৫২ রানে ব্রাউনের বিদায়ের পর চট্টগ্রামের মিডল অর্ডার ব্যাটাররা ব্যর্থ হন। ১টি করে চার-ছক্কায় নিউজিল্যান্ডের টম ব্রুস ১১ বলে ১৭ এবং সৈকত আলি ১১ রানে আউট হন।
৮৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে চট্টগ্রাম। ষষ্ঠ উইকেট ১৯ বলে ২৬ রান যোগ করে চট্টগ্রামের রান তিন অংক পার করেন অধিনায়ক শুভাগত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের রোমারিও শেফার্ড। ১৫তম ওভারে শুভাগতকে শিকার করে বরিশালকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন ক্যারিবীয়ান মিডিয়াম পেসার কাইল মায়ার্স। ৪টি চারে ১৬ বলে ২৪ রান করেন শুভাগত।
১৭তম ওভারের প্রথম বলে ইংল্যান্ডের পেসার জেমস ফুলারের বলে শেফার্ড ১১ রানে সাজঘরে ফিরলে, চট্টগ্রামের চ্যালেঞ্জিং স্কোরের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১৩৫ রান করে চট্টগ্রাম। বরিশালের মায়ার্স-সাইফুদ্দিন ২৮ রানে এবং ম্যাককয় ২৯ রানে ২টি করে উইকেট নেন।
জবাবে প্রথম ওভারেই সৌম্য সরকারকে হারায় বরিশাল। আল আমিন হোসেনের করা দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে তামিমের ক্যাচ ফেলে দেন সৈকত আলী। ম্যাচ থেকেও এরপর ধীরে ধীরে ছিটকে যায় চট্টগ্রাম। ৫৪ বলে ৯৮ রানের জুটি গড়েন তামিম ও মেয়ার্স। শুভগতর করা পঞ্চম ওভারে ২৬ রান নেন মেয়ার্স।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই অলরাইন্ডার ২৬ বলে ৩ ছয় ও ৫ ছক্কায় ৫০ রান করে বিলাল খানের বলে কট বিহাইন্ড হন।
আসরে প্রথম খেলতে নামা ডেভিড মিলারকে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ২২ বলে ২৫ রানের জুটিতেও নেতৃত্ব দেন তামিম। দক্ষিণ আফ্রিকার মারকুটে ব্যাটারের ব্যাট থেকে আসে ১৩ বলে ১৭ রান।
৪৮ বলে আসরে তৃতীয় ফিফটি করা তামিম ৪৩ বলে ৫২ রানের অপাজিত ইনিংসে চার মারেন ৯টি। টুর্নামেন্টের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে চারশ ছুঁয়ে বরিশাল অধিনায়কের রান ম্যাচ শেষে ৪৪২।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৩৫/৯ (ব্রাউন ৩৪, তানজিদ ২, ইমরানউজ্জামান ৭, ব্রুস ১৭, সৈকত ১১, শুভাগত ২৪, শেফার্ড ১১, নিহাদ ১০, সাকিল ৮*, আল আমিন ১, বিলাল ১*; মেয়ার্স ৪-০-২৮-২, সাইফ ৪-০-২৮-২, তাইজুল ৪-০-২২-১, ম্যাককয় ৪-০-২৯-২, বিলাল ৪-০-২৬-১)।
ফরচুন বরিশাল: ১৪.৫ ওভারে ১৩৬/৫ (তামিম ৫২*, সৌম্য ০, মেয়ার্স ৫০, মিলার ১৭, মুশফিক ৬*; শুভাগত ৩-০-৪৫-০, আল আমিন ২-০-২০-০, বিলাল ৪-০-৩০-১, শেফার্ড ৩-০-১৭-১, সাকিল ২-০-১৭-০, নিহাদ ০.৫-০-৫-০ )।
ফল: ফরচুন বরিশাল ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: কাইল মেয়ার্স